কি খেলে পাইলস ভালো হয় তার বিস্তারিত জানুন

সারা গায়ে চুলকানি ঔষধকি খেলে পাইলস ভালো হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। এবং পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনি যদি পাইলস সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি পড়ুন।

তাছাও এই আর্টিকেলে পাইলসের যাবতীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে। আপনি যদি পাইলস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পেজ সূচিঃ কি খেলে পাইলস ভালো হয়

কি খেলে পাইলস ভালো হয়

কি খেলে পাইলস ভালো হয় এবং সে খাবার গুলো কি কি সে সম্পর্কে এই অংশে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। পাইলস দুই ধরনের হয়ে থাকে বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ যা ফুলে থাকা শিরা। পাইলস বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে এবং ফাইবার যুক্ত খাবার পাইলস ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের জন্য খুব উপকারি।

তাই পাইলস দূর করতে কিছু সঠিক খাদ্য তালিকা রয়েছে সেসব খাবারের মাধ্যমে আপনার পাইলস সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে। চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক পাইলস দূর করতে যেসব খাবার সাহায্য করে সেসব খাবার গুলো-
ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্যঃ আপনারা কি জানেন, যে পাইলস সমস্যায় যারা ভুগছে তাদের জন্য কি পরিমান ফাইবার যুক্ত খাবার গ্রহন করা উচিত। পাইলস সমস্যায় যে সব মানুষ ভুগছেন তাদের কমপক্ষে প্রতিদিন ২৫-৩৮ গ্রাম ফাইবার যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।

এবং ফাইবার যেসব খাবারের মধ্যে রয়েছে তা হচ্ছে-

  • শাকসবজির মধ্যে-- ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, মুলা, পালংশাক, লেটুস, ঢেঁড়শ, লাউ, কচুর লতি, ব্রোকলি, টমেটো ইত্যাদির শাকসবজির মধ্যে ফাইবার রয়েছে।
  • ফলের মধ্যে-- কলা, পেঁপে, আপেল, তরমুজ, আঙুর, আম, কিশমিশ, আলুবোখারা, বেরি কাঁঠাল ইত্যাদি ফলের মধ্যে ফাইবার পাবেন।
  • ডাল-- ছোলা ডাল, মুখ ডাল, মটর ডাল, মসুর ডাল এসব খাবারের মধ্যে আপনার ফাইবার পেয়ে থাকেন।
  • গোটা শস্য-- কুসুম, ওটস, ব্রাউন রাইস, ছোলা, মটর, বাজরা এ গুলোর মধ্যেও আপনারা ফাইবার পেয়ে থাকেন।
    পর্যাপ্ত পানি পানঃ আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান না করেন তাহলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে আর এর ফলে আপনার পাইলস হতে পারে। কারণ আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করে তাহলে আপনার মল নরম করে।

    এর ফলে আপনার পাইলস সমস্যা থাকলে তা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। তাই একজন মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।

    রাতে রুটি খানঃ আপনারা রাতে ভাত খেতে পছন্দ করে থাকেন। কিন্তু আপনারা জানেন ভাতের বদলে যদি আপনি রাতে রুটি খেতে পারেন তাহলে আপনার পাইলস সমস্যা থাকলে তা দূর করতে সাহায্য করবে।

    কারণ ভাতের চেয়ে রুটিতে ফাইবারের পরিমান বেশি থাকে যা আপনার পাইলস সমস্যা দূর করে থাকে। তাই আপনার যদি পাইলস সমস্যা থাকে তাহলে রাতে ভাতের বদলে রুটি খাদ্য তালিকায় রাখুন।

    ইসবগুলের ভুসিঃ আপনার যদি পাইলস সমস্যা থাকে তাহলে ইসবগুলের ভুসি খান তাছাও যে কেউ এমনিতেও খেতে পারেন। তবে বিশেষ করে যাদের পাইলস সমস্যা রয়েছে তারা তাদের খাদ্য তালিকায় ইসবগুলের ভুসি রাখা উচিত।
    কারণ ইসবগুলের ভুসিতে ফাইবার থাকে যা আপনার অন্ত্রের উপর ভালো প্রভাব ফেলে এবং আপনার মল নরম করে। এ জন্য আপনি ২ চামচ ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলবেন পাইলস সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।

    শাকসবজি ও ফল খানঃ বেশি বেশি শাকসবজি ও ফল খান কারণ এতে অনেক ফাইবার থাকে যা আপনার পাইলস সমস্যা দূর করে থাকে। যেমন- কচুর লতি, ঢেঁড়শ, লাউ, শসা, গাজর, পেঁপে ইত্যাদি।

    ওটসঃ আপনারা হয়তো জানেন ওটস খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব কার্যকারী। কিন্তু এই ওটস আবার পাইলসের জন্য ও উপকারি কারন ওটসে ফাইবার থাকে যা পাইলসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

    প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ আপনার শরীরে যদি ক্ষতিগ্রস্ত কোষ থাকে সে গুলোকে মেরামত করে থাকে এই প্রোটিন যুক্ত খাবার। এবং যারা পাইলসের সমস্যায় ভুগছেন তাদের প্রতিদিন কমপক্ষে ৫৬ গ্রাম প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।

    বিনসঃ এটি বিশাল তন্ত্রজ খাদ্য আপনার পাইলসের সমস্যা থাকলে এই খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।

    সতর্কতাঃ আপনার যদি পাইলসে সমস্যা থাকে তাহলে কিছু কিছু খাবার রয়েছে সে গুলো এড়িয়ে চলতে হবে যেমন-

    তেলে ভাজা খাবার, দুগ্ধজাত খাবার, অতিরিক্ত লবন, মসলাযুক্ত খাবার, লাল মাংস এগুলো খাবার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলবেন।

    পাইলস কেন হয়

    পাইলস কেন হয় তা আপনারা এই অংশে এখন জানতে পারবেন। পাইলস একজন মানুষের বিভিন্ন কারণে হতে পারে চলুন পাইলস কি কারনে হতে পারে তা নিম্নে জেনে নেওয়া যাক-
    আপনার যদি দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে
    • চাপ দিয়ে পায়খানা করা
    • টয়লেটে বেশি সময় বসে থাকা
    • বারবার ডায়রিয়া
    • পায়খানার বেগ আটকে রাখা
    • শারীরিক পরিশ্রম না করা
    • পুষ্টিকর খাবার না খাওয়া
    • শরীরিরে অতিরিক্ত ওজন
    • দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করা
    • পারিপারিক ভাবে যদি কারো থাকে। তাহলে ঝঁকি থাকে পাইলস হওয়ার
    উপরে বর্ণিত এসব কারণে আপনার পাইলস হতে পারে। তবে ভয়ের কোনো কারণ নায় যদি আপনি সঠিক খাদ্য গ্রহন এবং আপনার চলাফেরা করতে পারেন। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলবেন।

    পাইলস এর লক্ষণ

    পাইলস এর লক্ষণ কি? এবং কিভাবে বুঝবেন আপনার পাইলস হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে এখানে বলা হয়েছে। পাইলসের বিভিন্ন লক্ষন রয়েছে চলুন নিম্নে জেনে নেওয়া যাক পাইলসের লক্ষণ সম্পর্কে-

    • মলদ্বার থেকে তাজা রক্ত পড়া
    • মলদ্বার থেকে ফুটা ফুটা রক্ত পড়া ও ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়া ব্যথা ছাড়া
    • পায়খানা করার সময় এবং পরে অস্বস্তি অনুভব হওয়া
    • মলদ্বার ও আশেপাশে যন্ত্রণাদায়ক পিন্ড হওয়া
    • মলদ্বারে চুলকানি
    • মলদ্বারের চারপাশে ফুলে যাওয়া
      সতর্কতাঃ এরকম লক্ষন বুঝলে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

      পাইলস এর চিকিৎসা

      পাইলস এর চিকিৎসা সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। পাইলসের লক্ষন বুঝেই আপনি চিকিৎসা শুরু করবেন না কারণ পাইলস দুই ধরণের হয়ে থাকে। এবং এই পাইলসের উপর ভিওি করে চিকিৎসা করতে হয়।

      অভ্যন্তরীন পাইলসঃ আপনার যদি মলদ্বারের ভিতরে রক্তনালী ফুলে যায় তাহলে বুঝবেন আপনার অভ্যন্তরীণ পাইলস হয়েছে। এবং সেই রক্তনালী থেকে আপনার কতগুলো রক্তপিন্ড বের হয় তার উপর ভিওি করে এই পাইলসকে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ডিগ্রীতে ভাগ করে থাকে।

      বাহ্যিক পাইলসঃ আপনার মলদ্বারের বাহিরে যে চামড়া দ্বারা আবৃত থাকে তার মধ্যে যদি রক্ত জমাট বাধে তাহলে ফুলে ওঠে।

      সতর্কতাঃ আপনি পাইলসের লক্ষণ বুঝেই পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসা শুরু করবেন না। পাইলসের বিভিন্ন ডিগ্রী থাকে ১ম,২য়,৩য়, ৪র্থ তা পরীক্ষা করে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করবেন।

      পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়

      পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় সম্পর্কে এই অংশে আপনারা জানতে পারবেন। পাইলস বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি অন্যতম সমস্যা। এ সমস্যা থেকে সমধান পেতে ডাক্তারের পরামর্শর পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি ও খাবার আছে যার মাধ্যমে পাইলস দূর করা যায়।
      বরফ বা আইসপ্যাকঃ আপনার যেখানে পাইলসের সমস্যা ব্যথা হয় সেই স্থানে কয়েক টুকরো বরফ নিয়ে কাপড়ে মুড়িয়ে লাগিয়ে রাখবেন এইভাবে দিনে কয়েক বার দিবেন দেখবেন অনেক আরাম পাবেন।

      গরম পানিঃ আপনি যদি পানি হালকা কুসুক গরম করে নিয়ে তার উপরে বসে ভাপ দিতে পারেন বা পাতিলে ঢেলে মুখ বন্ধ করে সেই পাতিলে বসে ভাপ দিতে পারেন ভালো ফল পাবেন।

      অ্যালোভেরাঃ আপনি যদি অ্যালোভেরার ভিতরে যেই সাদা অংশ থাকে সেইটা বের করে জেলের মতো একটি প্যাক তৈরী করে পাইলসের জায়গায় লাগাতে পারেন তাহলে অনেক ভালো উপকার পাবেন।

      লেবু আদার রস ও মধুঃ আপনি যদি মধুর সাথে লেবুর রস ও আদা নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার পাইলস দূর করতে সাহায্য করবে।

      শরীরচর্চাঃ আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন বা শরীরচর্চা করতে পারেন তাহলে আপনার পাইলস দূর করতে সাহায্য করবে।

      এবং তাছাড়াও আপনি আঁশ ও ফাইবার যুক্ত খাবার খাবেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, ইসবগুলের ভুসি খাবেন।

      এগুলো পদ্ধতি ও খাবারের মাধ্যমে আপনি চিকিৎসার পাশাপাশি পাইলস দূর করতে পারবেন। এবং অবশ্যই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এসব চিকিৎসা করবেন।

      পাইলস থেকে কি ক্যান্সার হয়

      পাইলস থেকে কি ক্যান্সার হয়? উওর হবে না, পাইলস থেকে ক্যান্সার হয় না। ক্যান্সার এবং পাইলস ভিন্ন হয়ে থাকে তাদের কোন সম্পর্ক নাই। এবং যারা মনে করেন যে পাইলস থেকে ক্যান্সার হয় তাদের আসলে ভুল ধারণা।

      তাই কোন ব্যক্তির যদি পাইলস হয়ে থাকে তাহলে ভয় পাবার কারণ নাই। আপনার যদি পাইলস প্রাথমিক অবস্থায় থাকে তাহলে সে অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। এবং পাইলসের ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ডিগ্রী থাকে।

      আপনার যদি ৪র্থ ডিগ্রীতেও চলে যায় তাহলে ও ভয় পাবার কারণ নায় আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করবেন। তবে আপনি যদি অবহেলা করে বসে থাকেন তাহলে পরর্বতীতে সমস্যা হতে পারে। তাই অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা করবেন।

      শেষ কথাঃ কি খেলে পাইলস ভালো হয়

      কি খেলে পাইলস ভালো হয় সে সম্পর্কে আপনারা ইতিমধ্যে বিস্তারিত ভাবে জেনেছেন। তাই আপনার যদি পাইলসের মতো সমস্যা থাকলে এসব খাবার ও পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার পাইলস দূর করতে সাহায্য করবে।

      তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করবেন। এবং এরকম আরো বেশি বেশি তথ্য পেতে আমার এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

      এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

      পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
      এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
      মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

      ট্রিক্সপ্রমোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

      comment url