বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সিবিদেশ যাওয়া সরকারি এজেন্সি সম্পর্কে আমরা অনেকেই সঠিক তথ্য জানিনা। বাংলাদেশি বিদেশে যাওয়ার জন্য সরকারি এজেন্সি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ-দূতাবাস-ও-কনস্যুলেট-এর-সেবাঅনেকেই কর্মসংস্থান শিক্ষা চিকিৎসা কিংবা অন্যান্য উদ্দেশ্যে বিদেশে যেতে চান আজ এসব ক্ষেত্রে সরকারি অফিস-সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সাহায্য সেবা প্রদান করে থাকে। আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

পোস্ট সূচিপত্র: বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি

বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি সম্পর্কে জানুন

বিদেশ যাওয়ার জন্য সরকারি এজেন্সি সাধারণত কাজ করে দুটি প্রধান ক্ষেত্রের মধ্যে এরমধ্যে একটি হল শ্রমিক বা কর্মী প্রেরণ এবং হচ্ছে শিক্ষাগত বা পর্যটন সংক্রান্ত ভিসা ও অন্যান্য সহায়তা। বাংলাদেশের জন্য বেশ কিছু সরকারি এজেন্সি কাজ করছে না বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করে থাকে সেগুলো নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলো:

  • বিপিএল: এটি একটি সরকারি সংস্থা বিদেশে কর্মী প্রেরণ এবং বৈদেশিক শ্রম ও বাজারে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়তা করে। এটি বিদেশে কাজের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং লাইসেন্স প্রদান করে থাকে।
  • বাংলাদেশ অভিবাসন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর: বিদেশ যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট এবং ভিসা সংক্রান্ত কাজের জন্য এই সংস্থার মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
  • বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি: বিভিন্ন সরকার প্রতিষ্ঠান যেমন শিক্ষা মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিশেষ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিদেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং বৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: বিদেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অভিবাসন সম্পর্কিত বিষয় এবং দেশের নাগরিকদের বিদেশে সুরক্ষা সংক্রান্ত কাজ সম্পাদন করে থাকে এই মন্ত্রণালয়।

এছাড়াও অন্যান্য সরকারি সংস্থা বা অধিদপ্তর বিদেশ যাওয়ার জন্য ভিসা অভিবাসন কাজের অনুমতি বা শিক্ষাগত সুযোগের জন্য বিশেষ সহায়তা দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশের বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি গুলো কি কি 

বাংলাদেশে বিদেশে যাওয়ার জন্য কয়েকটি সরকারি এজেন্সি রয়েছে যা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে সহায়তা প্রদান করে থাকে।

বৈদেশিক-মন্ত্রণালয়ের-মাধ্যমে-বিদেশ-যাওয়াএসব এজেন্সি বিভিন্ন ধরনের সেবা যেমন বিদেশে কর্মসংস্থান উচ্চশিক্ষা অভিবাসন ভিসা প্রক্রিয়া পাসপোর্ট প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে। নিম্নে কিছু প্রধান সরকারি এজেন্সির নাম দেওয়া হল:

  • বিপিএমইটি: বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশী কর্মী প্রেরণের কাজ করে থাকে এই সংস্থাটি এটি বিদেশে কাজের সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। এই সংস্থাটি কাজের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া কাজের লাইসেন্স এবং বৈদেশিক শ্রম বাজারে যাওয়ার জন্য দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে।
  • বাংলাদেশ পাসপোর্ট অধিদপ্তর: পাসপোর্ট প্রদান পাসপোর্ট নবায়ন এবং ভিসা সম্পর্কিত অন্যান্য কাজের জন্য এটি দায়িত্বশীল।
  • পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের বিদেশি সম্পর্ক কূটনৈতিক কাজ নাগরিক সেবা এবং দেশের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য দায়িত্ব পালন করে থাকে এছাড়াও বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে নাগরিক সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।
  • বাংলাদেশ সরকারি কনস্যুলেট ও দূতাবাস: বাংলাদেশী নাগরিকদের বিদেশে বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা যেমন জরুরি অবস্থায় সহায়তা পাসপোর্ট বা ভিসা সেবা এবং কাজের জন্য অনুমোদন প্রদান।
  • বাংলাদেশ রেভিনিউ বোর্ড: বিদেশে যাতায়াত বিদেশী মুদ্রা আনা এবং প্রেরণ বা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত কর ও অন্যান্য আইনি বিধান নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এটি।

এছাড়াও কিছু অন্যান্য সংস্থাবাদ দপ্তর ও বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে থাকে যেমন বিদেশে বিনিয়োগ ব্যবসা সংক্রান্ত সহায়তা ইত্যাদি।

বাংলাদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলেট এর সেবা

বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনসোলেট বাংলাদেশের সরকারের বিদেশে অফিস যা দেশের নাগরিকদের সেবা প্রধান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করতে কাজ করে। দূতাবাসের প্রধান দায়িত্ব গুলো হল দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন এবং উন্নয়ন করা। এছাড়াও বিদেশে থাকা বাংলাদেশীদের সমস্যা সমাধান পাসপোর্ট হারানো, জরুরি সহায়তা প্রদান এবং বৈধতার বিষয় সুনিশ্চিত করা। এছাড়াও বিদেশে যাওয়ার জন্য ভিসা প্রধান বিভিন্ন বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠান থেকে নথিপত্রের গ্রহণ ও সম্মতি প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রচার এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক করে তোলে এই দূতাবাস। কনসুলেট দূতাবাসের একটি শাখা যা বিশেষভাবে নাগরিক সেবা এবং বিভিন্ন কনসিলার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এর প্রধান কাজ হল বিদেশে বাংলাদেশ নাগরিকদের পাসপোর্ট, জন্ম সনদ, মৃত্যুর সনদ ইত্যাদি সরবরাহ করা পাশাপাশি একটি বাংলাদেশীদের অনুরোধে বিশেষ সাহায্য যেমন অস্থায়ী পাসপোর্ট ভিসা প্রসেসিং ইত্যাদি করে থাকে। নিম্নে বাংলাদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলেটের সেবা গুলো দেখানো হলো:

  • পাসপোর্ট ভিসা জন্ম সনদ নাগরিক সেবা যেমন পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে সহযোগিতা সুরক্ষা এবং ভ্রমণ সম্পর্কিত পরামর্শ প্রদান পড়ে থাকে বাংলাদেশি দূতাবাস ও কনসুলেট।
  • বাংলাদেশের নাগরিকদের আইনগত সুরক্ষা ও সহায়তা দিয়ে থাকে।
  • বিভিন্ন দেশের সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং সুসংহত করা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস এবং কনসোলেট বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তৈরি করতে এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের নানা ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

বিএমইটি এর মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার নিয়ম

বিএমইটি বাংলাদেশের একটি সরকারি সংস্থা যা বিদেশে কর্মী প্রেরণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়তা করে। বিদেশে কাজের জন্য বিএমইটি একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এখানে বিদেশ যাওয়ার নিয়ম গুলো তুলে ধরা হলো:

  • অনুমোদন প্রাপ্ত সংস্থার মাধ্যমে আবেদন: বিএমইটিতে বিদেশে সহ কর্মসংস্থান পাওয়ার জন্য আপনাকে অনুমোদিত একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। বিএমইটি বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্ট থেকে নিবন্ধিত করে যারা বিদেশে কাজের সুযোগ দেয়।
  • ফি প্রদান: বিদেশে কাজের জন্য আপনাকে বিএমইটি এবং রিক্রুটিং এজেন্সি নির্ধারিত ফ্রি পরিশোধ করতে হবে এই ফ্রি সাধারণত ভিসা বিমানের টিকেট মেডিকেল পরীক্ষা এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া সম্পর্কিত খরচের জন্য নেয়া হয়।
  • প্রাথমিক যোগ্যতা: বিভিন্ন দেশ ও কাজের জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হয় যেমন বয়স শিক্ষাগত যোগ্যতা অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।
  • মেডিকেল পরীক্ষা: বিদেশে কর্মী পাঠানোর জন্য বিএমইটি নির্দিষ্ট মেডিকেল পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে থাকে। এজন্য আপনাকে বিএমইটি অনুমোদিত হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে হবে।
  • প্রশিক্ষণ: যদি আপনার নির্দিষ্ট কাজের জন্য প্রয়োজন হয় তাহলে বিএমইটির অধীনে বা অনুমোদিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া আবশ্য হতে পারে।
  • ভিসা প্রক্রিয়া: আপনার কর্মসংস্থান সম্পর্কিত ভিসা প্রক্রিয়া অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বিদেশের দূতাবাসের আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করবে।
  • প্রতিষ্ঠান এবং দেশ নির্বাচন: বিদেশে কোন দেশে এবং কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চান সেটা আগে থেকে নিশ্চিত করে নিতে হবে বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা আলাদা নিয়ম থাকতে পারে।

বিএমইটি এর মাধ্যমে বিদেশে যাত্রা প্রক্রিয়ার সময় সাপেক্ষ এবং খরচসহ হতে পারে তাই সবদিক ভেবে পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়া

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন। মূলত এই দুটি মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষা কল্যাণ এবং বিদেশে কাজের সুযোগের জন্য নানা ধরনের কাজকর্ম পরিচালনা করে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বিদেশে কর্মী পাঠানোর জন্য সরকারের নীতিমালা ও প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালিত হয় যেমন বিদেশে কর্মী পাঠানোর জন্য বিশেষ প্রকল্প বা প্রোগ্রাম পরিচালনা, প্রবাসী কর্মীদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষা, বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক বিভিন্ন সেবা প্রদান ইত্যাদি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশে কর্মী পাঠানোর জন্য আপনাকে অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তারপর আপনাকে বিদেশে কাজ করার জন্য বিভিন্ন দেশের প্রয়োজনে মেডিকেল পরীক্ষাগুলো করিয়ে নিতে হবে।

সাধারণত মন্ত্রণালয় অনুমোদিত মেডিকেল সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানো হয়। এরপর কিছু বিশেষ কাজের জন্য দক্ষতা বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় এজন্য আপনাকে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিজস্ব ওয়েব সাইটে বিদেশে কর্মসংস্থানের বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করে থাকে সেখানে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন দেশের প্রবাসী শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়া মূলত সরকারি নির্দেশনা, অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি সহায়তায় এবং কিছু প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও মেডিকেল পরীক্ষার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। বিদেশের কাজের সুযোগ নেওয়ার জন্য এসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সরকারি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ

সরকারি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ থেকে থাকে আমাদের দেশে। এ স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য অবশ্যই আবেদন করতে হয়। এসব আবেদন মূলত অনলাইনে করতে হয় এবং কিছু বৃত্তি বা স্কলারশিপের ক্ষেত্রে সরাসরি আবেদনও করা যায়। বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়ে আবেদন জমা করতে হয়। আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন যেসব কাগজপত্র সেগুলো হচ্ছে শিক্ষাগত যোগ্যতা, পাসপোর্ট, ভাষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট (IELTS, TOEFL) ইত্যাদি থাকতে হয়। সরকারি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য স্কলারশিপ প্রোগ্রাম আছে যেগুলো হলোঃ

  • বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রচারিত বৃত্তি প্রোগ্রাম
  • প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট
  • বিসিএস স্কলারশিপ
  • মেক্সিকান স্কলারশিপ প্রোগ্রাম 
  • ফলব্রাইট স্কলারশিপ(যুক্তরাষ্ট্র)

আরো বেশ কিছু স্কলারশিপ প্রোগ্রাম আমাদের বাংলাদেশে চালু রয়েছে সরকারিভাবে। এসব সরকারি স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে যদি কোন স্টুডেন্ট এর যোগ্যতা থেকে থাকে তবে সেই স্টুডেন্ট চাইলেই এসব স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে।

জাতীয় কর্মসংস্থান সেবা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ

জাতীয় কর্মসংস্থান সেবা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে আমাদের দেশের মানুষ। যাত্রা কর্মসংস্থান সেবা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যেভাবে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ হয় তা হচ্ছেঃ প্রথমত NES অফিসে গিয়ে নিবন্ধন করতে হয় বা অনলাইনেও নিবন্ধন করা যায়। নিবন্ধন শেষে নিবন্ধনের সময় প্রয়োজনে ডকুমেন্টস এবং তথ্য প্রদান করতে হয় এবং যাচাই করা হয়। পছন্দ মতো চাকরির জন্য আবেদন করা যায় NES এর বিজ্ঞাপন দেখে। 

চাকরি আবেদন করার পরে অবশ্যই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। কারণ নির্বাচিত হয়ে গেলে নির্বাচিত চাকরির জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পরবর্তীতে চুক্তি ও ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় NES চুক্তিপত্র এবং ভিসা সংক্রান্ত প্রক্রিয়া জন্য কাজ করে থাকে। NES বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব ভূমিকা পালন করে থাকে তা হচ্ছেঃ
বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে থাকে এই সংস্থা।

কর্মসংস্থানের পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকে তারা। শুধু প্রশিক্ষণ দিয়েই তারা থেমে থাকে না নিরাপদ কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতীযতা করে।NES  বিভিন্ন এজেন্সির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বৈধ উপায়ে তারা কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে। NES তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য আবেদন ও নিবন্ধন করা যায়। তাদের রয়েছে বিদ্যাসিক কর্মসংস্থান এবং প্রবাসী কর্মীদের পরিনত হবে। এই তহবিল থেকে কর্মীরা আর্থিক সহায়তা বীমা সুবিধা অবস্থায় ক্ষেত্রে দেশে ফেরত কিংবা মৃত্যুর ক্ষেত্রে ইত্যাদি প্রদান করে থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ

বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ সরাসরি হয়ে থাকে না। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য নিয়োগের ব্যবস্থা করেনা। তবে তারা বিভিন্ন স্কলারশিপ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক খাতে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে। এই ধরনের সুযোগ মূলত তৈরি করে থাকে সাধারণত আন্তর্জাতিক কিছু প্রতিষ্ঠান, দেশের অভ্যন্তরীণ কিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বা আর্থিক সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এ সুযোগ তৈরি হয়ে থাকে। এসব প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও উচ্চতা শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকে যা তাদেরকে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ভাবে প্রতিযোগিতা মূলক কর্মসংস্থানের জন্য যোগ্য করে তুলে থাকে।

বাংলাদেশ-ব্যাংকের-মাধ্যমে-বিদেশ-যাওয়ার-সুযোগবাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশগামী কিছু সুযোগ আছে যেমন ঃ বিশ্ব ব্যাংক এবং আই এম এফ এর সাথে যৌথ উদ্যোগে ট্রেনিং ও স্কলারশিপ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিশ্ব ব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থা মধ্যে পার্টনারশিপের মাধ্যমে বিভিন্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম বা স্কলারশিপের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা উন্নত দেশগুলোতে গিয়ে সেখানকার উন্নত অর্থনৈতিক এবং আর্থিক বিষয়ে জ্ঞান লাভ করার সুযোগ পেয়ে থাকে। এছাড়াও বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ হয়ে থাকে।

যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক বিশ্বের অনেক সরকারের সাথে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে যার মাধ্যমে ব্যাংকের কর্মকর্তারা বা মেধাবী শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেয়ে থাকে। অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়ে থাকে। এই প্রশিক্ষণ গুলো বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় যেসব কেন্দ্র ব্যাংক বা আন্তর্জাতিক কিছু প্রতিষ্ঠান তারা আরো অনেক ধরনের সুযোগ তৈরি করে দেয় বিদেশ যাওয়ার জন্য।

বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক

বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক যা আমাদের সবসময় মনে রাখা অত্যন্ত দরকার। যার ফলে বিদেশে যাওয়ার আগে এবং বিদেশ যাওয়ার পরে নিরাপত্তা ঝুঁকি বজায় থাকে। বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু দিক অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সেগুলো হচ্ছে নিয়োগ দাদা প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করতে হবে যে সেই প্রতিষ্ঠান আসলে সত্য নাকি প্রতারণা করে থাকে। দ্বিতীয়তঃ ভিসার ধরন এবং ভিসার বৈধতা অবশ্য যাচাই-বাছাই করতে হবে যেন পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা বা নিরাপত্তা হীনতাই না ভুগতে হয়।

যে দেশে যাবেন সে দেশের আইন কানুন এবং নিয়ম কানুন সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা নিয়ে রাখতে হবে যেন পরবর্তীতে দেশের বাইরে যাওয়ার পরে বিপদের সম্মুখীন না হতে হয়। ঠিক রাখতে হবে ভাষাগত দক্ষতা। কারণ দেশের বাইরে যাওয়ার পরে সব থেকে বেশি কাজে দেয় এই ভাষার দক্ষতা ভাষাগত দক্ষতা যদি ঠিকভাবে না থাকে তাহলে বিদেশে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হতে পারে। অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং বাজেট সম্পর্কে সঠিক ধারণা এবং সঠিক পরিকল্পনা রাখতে হবে জেনে পরবর্তীতে কর্মসংস্থানের অভাবে বিপদের না পড়তে হয়। অবশ্যই বিদেশ যাওয়ার আগে স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং বীমা সঠিকভাবে করে রাখতে হবে যেন পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা না দেখা দেয়।

চুক্তিপত্রের যেসব শর্তাবলী আছে এবং কর্মস্থলে যে সব শর্তাবলী থাকবে সেসব অবশ্যই ভালোভাবে পড়ে বুঝে নেওয়া উচিত যেন পরবর্তীতে কোন ধরনের সমস্যা এবং বিপদে না পড়তে হয়। অবশ্যই জরুরী যোগাযোগ নাম্বার সংরক্ষণ করতে হবে জানো যে কোন বিপদ-আপদে জরুরি নাম্বারে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে থাকে। পাসপোর্ট এবং ভিসা সমস্যা সমাধান অবশ্যই করে রাখতে হবে যেন দেশের বাইরে গিয়ে বিপদে না পড়তে হয়। এসব অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং বিদেশ যাওয়ার আগে অবশ্যই এগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

শেষ কথা

সরকারি এজেন্সি গুলোর জন্য এখন খুব সহজেই এবং নিরাপদ ভাবে বিদেশ যাওয়া যাচ্ছে। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরকম আরো তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করতে থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। 33612

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রিক্সপ্রমোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url