ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত

আয়রন ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। এবং তাছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় সে সম্পর্কে ও বলা হয়েছে।
তাই আপনি যদি ভিটামিন ডি এর অভাব এবং এর করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পেজ সূচিঃ ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা সম্পর্কে আমারা এই আংশে জানবো। কারণ বড় থেকে ছোট সবার জন্য ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
এবং ভিটামিন ডি এর প্রধান বা প্রকৃতিক উৎস হচ্ছে সূর্য আলো যেখানে ৭০% ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। তাছাড়াও শরীরকে সুস্থ্যে রাখতে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে পানিজ ও ভেসজ খাবারে ৩০% ভিটামিন ডি রয়েছে।
নিম্নে কিছু খাবারের কথা বলা হয়েছে যা আপনার শরীরের ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করবে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
চর্বিযুক্ত মাছঃ আপনার যদি ভিটামিন ডি এর অভাব থাকে তাহলে চর্বি যুক্ত মাছ আপনার জন্য ভালো উৎস। যেমন সার্ডিন, স্যালমন, ম্যাক্রেল ইত্যাদি চর্বি যুক্ত মাছ আপনার ভিটামিন ডি অভাব দূর করবে।
দুধঃ ভিটামিন ডি এর উপাদানের মধ্যে দুধ ও একটি কার্যাকারী। আপনি যদি নিয়ম করে ১ গ্লাস হালকা কুসুম গরম দুধ খেতে পারেন এবং শীতের সময় দুধের সাথে একটু হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ করবে।
মাছের তেলঃ ভিটামিন ডি এর একটি উৎস হচ্ছে মাছের তেল। কড জাতীয় মাছে কিন্তু প্রচুর ভিটামিন ডি থাকে এবং এই মাছের তেল কিন্তু আপনার সোরাইসিস, রিকেটস নামে রোগ থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
ওটমিলঃ ভিটামিন ডি এর একটি উৎস হচ্ছে ওটমিল। এতে কিন্তু ভিটামিন ডি বাদেও মিনারেল ও অন্য ভিটামিন রয়েছে। তাই আপনি সকালে দুধের সাথে ওটমিল মিশিয়ে খেতে পারেন স্বাস্থ্যে ভালো রাখবে এবং ডায়াবেটিস ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
ডিমের কুসুমঃ আপনার যদি ভিটামিন ডি এর অভাব থাকে তাহলে আপনার জন্য ডিমের কুসুম ভালো উৎস। ডিমের সাদা অংশে প্রোটিন এবং কুসুমে থাকে ফ্যাট ও মিনারেল। তাই ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করেত ডিমের কুসুম খান।
সামুদ্রিক মাছঃ ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে একটি বড় উৎস হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ। চিংড়ি, স্যামন, ইলিশ মাছের ডিম এ গুলো সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি ভরপুর রয়েছে।
টুনা মাছঃ ভিটামিন ডি এর আরেকটি ভালো উৎস হচ্ছে টুনা মাছ। মোলা ঢেলা বা ছোট মাছে ভিটামিন ডি থাকে। এবং ছোট মাছ চোখের জ্যতির জন্য ও কার্যকারী। এ জন্য আপনি ছোট মাছ বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
মাশরুমঃ আপনি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকায় মাশরুম যোগ করতে পারেন। কারন রোদে বেড়ে উঠা মাশরুমে ভিটামিন ডি থাকে। আপনি ডিম, পান্তা, সালাতের সাথে বা অন্য ভাবেও খেতে পারেন।
সবুজ শাকসবজিঃ ভিটামিন ডি এর অভাব পূরর্ণ করার জন্য কিন্তু সবুজ শাকসবজি ও একটি ভালো উপাদান। তাই ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজি বেশি বেশি খাবেন।
কমলা বা মালটাঃ ভিটামিন ডি কিন্তু কমলা বা মালটা তে ও থাকে তাই এর অভাব পূরন করতে আপনি কমলা খান।
টক দইঃ ভিটামিন ডি এর একটি উৎস হচ্ছে টক দই আপনি যদি নিয়ম করে টক দই খেতে পারেন তাহলে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরর্ণ করতে সাহায্য করবে।
পনিরঃ আপনার শরীরের কিন্তু ভিটামিন ডি এর অভাব পূরর্ণ করতে পনির খুব কার্যকারী একটি উপাদান।
কাঠবাদামঃ আপনার শরীরের ভিটামিন ডি এর অভাব পূরর্ণ করতে কাঠবাদাম কিন্তু কার্যকারী একটি উপাদান। তাই আপনি যদি নিয়ম করে কাঠবাদাম খেতে পারেন তাহলে ভালো ফল পাবেন।
ব্রকলিঃ ভিটামিন ডি এর অভাব পূরর্ণ করে থাকে কিন্তু ব্রকলি ও তাই আপনার খাদ্য তালিকায় যদি ব্রকলি রাখতে পারেন তাহলে ভালো ফল পাবেন।

ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ

ভিটামিন ডি অভাবের লক্ষণ সম্পর্কে এখন আমারা এই অংশে জানবো। এবং ইতিমধ্যে উপরে জেনেছি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা। আমরা অনেকেই জানিনা যে ভিটামিন ডি এর লক্ষন কি এবং কিভাবে ভিটামিন ডি এর লক্ষন বুঝা যায় তা নিম্নে বলা হল-
আপনি যেসব লক্ষন দেখে বুঝবেন যে আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব হয়েছে তা হচ্ছে। আপনার হাড়ে ও জয়েন্টে ব্যথা অনুভব করা এবং কোমরে ব্যথা অনুভব করা এরকম হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
এবং আপনার ক্লান্তি বোধ হওয়া, চুল পড়া, হজমের সমস্যা, পেশীতে টান, ওজন বৃদ্ধি, মাড়ি ফুলা, রক্তপাত হতে পারে, মেজাজ খিটখিট হওয়া, হতাশা এবং আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ কমে যাওয়া।
উপরের বর্ণিত লক্ষন গুলোর সাথে আপনার সমস্যা মিলে যায় তাহলে বুঝবেন আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব হয়েছে। এ অবস্থায় আপনি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা উপরে দেখে সে গুলো খাবেন।
কিন্তু খাওয়ার আগে আপনি ডাক্তারের কাছে যেয়ে সমস্যা গুলো বলবেন এবং ডাক্তার যে পরামর্শ দিবে ওই অনুযায়ী ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাবেন।

ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয়

ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয় তার সম্পর্কে আমরা এখন জানবো। ইতিমধ্যে উপরের জেনেছেন যে ভিটামিন ডি এর লক্ষন। এবং এসব লক্ষন হলে বুঝেবেন আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব হয়েছে।
তাই আপনি যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ভিটামিন ডি এর অভাবে অস্টিওম্যালাসিয়া এবং অস্টিওপোরোসিস এর মতো রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এবং শিশুদের ভিটামিন ডি এর অভাবে রিকেটস রোগ হতে পারে।
তাই আপনি এসব রোগ থেকে মুক্ত থাকতে এবং শরীরকে সুস্থ্যে রাখতে আপনি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাবেন। কিন্তু এসব লক্ষন দেখেই আপনি পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ডি খাওয়া শুরু করবেন না।
আগে আপনি পরীক্ষা করে দেখবেন তারপর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ডি খাবার খাওয়া শুরু করবেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্যে ঝুঁকি থাকবেনা।

ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়

ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয় সে সম্পর্কে এখন একটু জানবো। আপনি যখন সূর্যের আলোয় যাবেন না এবং আপনি যখন ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাবেন না তখন ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিতে পারে।
এ জন্য আপনাকে সূর্যের আলোতে পর্যাপ্ত পরিমানে যেতে হবে এবং ভিটামিন ডি এর লক্ষন বুঝে আপনাকে ভিটামিন যুক্ত খাবার খেতে হবে।

ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজি

ভিটামিন ডি যুক্ত শাকসবজি সম্পর্কে এই অংশে এখন আমরা জানবো। ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হলো সূর্যের আলো। কিন্তু তাছাড়া ও আমরা বিভিন্ন খাবারে ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি যা খাওয়ার মাধ্যেমে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর হয়।
এবং এরকম খাবারের মধ্যে কিছু শাকসবজি রয়েছে যা ভিটামিন ডি এর একটি ভালো উৎস। এবং শাকসবজির মধ্যে পালং শাক, মটরশুঁটি অন্যতম এবং মাশরুম ও থাকে। তাছাড়াও সবুজ শাকসবজি তে ভিটামিন ডি থাকে অনেক।
এ জন্য আপনি ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি খাবেন। এবং সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে যা আপনাকে সুস্থ্যে রাখতে সাহায্য করবে।

ভিটামিন ডি যুক্ত মাছ

ভিটামিন ডি যুক্ত মাছ কি কি তা আমরা এখন জানবো। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর হয় তাহলে মাংশ পেশি ও হাড় দুর্বল হয়ে যায়। এ জন্য আপনার শরীরকে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে সামুদ্রিক মাছ খাবেন।
সামুদ্রিক মাছ যেমন, স্যালমন, সার্ডিন, ম্যাক্রেল এসব জাতীয় মাছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ডি রয়েছে। এবং তাছাড়াও কড মাছের তেল ও কিন্তু অনেক ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
এবং তার পাশাপাশি টুনা মাছ ও কিন্তু ভিটামিন দি এর একটি ভালো উৎস। তাই আপনার শরীরকে সুস্থ্যে রাখতে ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে এই গুলো মাছ খাবেন।

ভিটামিন ডি যুক্ত ফলের নাম

ভিটামিন ডি যুক্ত ফলের নাম সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। আপনার শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব হয় তাহলে বিভিন্ন ভিটামিন ডি যুক্ত ফল রয়েছে যা আপনার শরীরের ভিটামিন ডি অভাব দূর করবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফল নিম্নে বলা হল-
মালটাঃ ১০০ গ্রাম মালটাতে ১.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি থাকে এ জন্য মালটা আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরর্ণ খুব কার্যকারী।
স্ট্রবেরিঃ ভিটামিন ডি এর অভাব পূরর্ণে কিন্তু স্ট্রবেরি কার্যকারী ফল। প্রতি ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরিতে ২১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি থাকে।
পাঁকা পেঁপেঃ প্রতি ১০০ গ্রাম পাঁকা পেঁপেতে ৪৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি রয়েছে। এ জন্য আপনি ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে পাঁকা পেঁপে খাবেন।
খেজুরঃ ১০০ গ্রাম খেজুরে ২.৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি থাকে যা আপনার শরীরের জন্য খুব উপকারি। তাই ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে খেজুর খান।
ডালিমঃ ১০০ গ্রাম ডামিল এ ১০.২ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি থাকে। তাই ডালিম ভিটামিন ডি এর একটি ভালো উৎস।
আমঃ ১০০ গ্রাম আমে ২৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি রিয়েছে।
ডুমুরঃ ১০০ গ্রাম ডুমুরে ১০.৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি রয়েছে।
কমলাঃ ১০০ গ্রাম কমলাতে ৫৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি থাকে।
কলাঃ ১০০ গ্রাম কলাতে ৮.৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি থাকে।
লেবুঃ ১০০ গ্রাম লেবুতে ৩১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি রয়েছে।
ইতিমধ্যে আপনারা জানলেন যে ভিটামিন ডি যুক্ত ফল। এবং এসব ফল খাওয়ার মাধ্যেমে আপনারা ভিটামিন ডি এর অভাব দূর করতে পারবেন। এ জন্য আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।

ভিটামিন ডি যুক্ত বাদাম

ভিটামিন ডি যুক্ত বাদাম খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের ভিটামন ডি এর অভাব দূর করতে পারবেন। ভিটামিন ডি এর একটি ভালো উৎস হচ্ছে কাঠবাদাম। আপনার শরীরকে সুস্থ্যে রাখতে নিয়ম করে কাঠবাদাম খেতে পারেন।
সূর্যের আলো এবং বিভিন্ন খাবার রয়েছে যেখানে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এবং তার মধ্যে কাঠবাদাম একটি ভিটামিন ডি এর উৎস। এ জন্য আপনি নিয়ম করে কাঠবাদাম খেতে পারেন।

শিশুদের ভিটামিন ডি এর অভাবের লক্ষণ

শিশুদের ভিটামিন ডি এর অভাবের লক্ষণ এখন এই অংশে আমারা জানবো। আপনার শিশুর হাত পা এবং বুকের পাজরের নরম হয়। এবং আপনার শিশুর নানা রকম অঙ্গ বিকৃতি দেখা দিতে পারে আর তাকে বলা হয় রিকেটস।
এবং তাছাড়াও আপনার শিশু বিভিন্ন সংক্রমন বেড়ে যেতে পারে। এবং বাচ্চাদের ও পেশির শক্তি কমে যায় ও হাপ পায়ে ব্যথা হতে পারে।
তাই আপনার শিশুর এসব লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেয়ে পরীক্ষা করে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলবেন।

শেষ কথাঃ ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা

ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা সম্পর্কে ইতিমধ্যে আপনারা জেনে গিয়েছেন। এবং তাছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাব কিভাবে দূর করবেন তার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনেছেন। তাই আপনার শরীরকে সুস্থ্যে রাখতে এসব খাবার খেতে পারেন।
এবং আজকের আর্টিকেলের মাধ্যেমে আপনি যদি একটু উপকৃত হয়ে থাকেন এবং আরো এরকম তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রিক্সপ্রমোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url