সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
মালয়েশিয়া ১৫০০ টাকা বাংলাদেশের কত টাকাসুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি, এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছেন। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের বেতন বেশি এবং কম এই সম্পর্কে আলোচনা করব।
এছাড়াও আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সুইজারল্যান্ডের ভিসার দাম কত এবং কিভাবে ভিসা
পাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে
নিই সুইজারল্যান্ডের কাজের চাদিহা গুলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি জানুন
- সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি
- সুইজারল্যান্ডের কোন কাজের বেতন কত
- সুইজারল্যান্ড এর ভিসার দাম কত
- বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে
- সুইজারল্যান্ড এর সর্বনিম্ন বেতন কত
- সুইজারল্যান্ড এর কাজের ভিসা পেতে কি লাগে
- সুইজারল্যান্ড এর ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
- সুইজারল্যান্ড মুদ্রার নাম কি
- সুইজারল্যান্ড এর কাজ সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা ও প্রশ্ন
- লেখক এর মন্তব্য
সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি
সুইজারল্যান্ডে কাজের বাজারটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং উচ্চ দক্ষতা ও
বিশেষজ্ঞদের চাহিদা রয়েছে। প্রায় সব খাতেই আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনী চিন্তা
এবং সেবা উন্নয়নের জন্য দক্ষ কর্মীদের প্রয়োজন হয় এখানে সুইজারল্যান্ডে কোন
কাজের চাহিদা বেশি তুলে ধরা হলো।
তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টঃ সুইজারল্যান্ডে আইটি
সেক্টরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উদ্বোধনী প্রযুক্তি কোম্পানি যেমন গুগল
মাইক্রোসফট এবং অনেক স্টার্ট আপ ও সুইজারল্যান্ড অবস্থিত। যাদের উন্নতমানের
সফটওয়্যার ডেভেলপার সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার এবং সাইন্টিস্ট এর প্রয়োজন। কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তা সাইবার সিকিউরিটি ও ক্লাউড কম্পিউটিং মেশিন লার্নিং এ দক্ষ প্রফেশনাল
দের এখানে বিশাল চাহিদা রয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবাঃ সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা উন্নত
অত্যন্ত এবং চাহিদা বিশাল। বিশেষ করে অভিজ্ঞ ডাক্তার নার্স এবং ফিজিওথেরাপিস্টের
চাহিদা অনেক। এবং সুইজারল্যান্ডের বাসিন্দাদের দীর্ঘায়ু এবং উন্নতমানের
স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কারণে নতুন কর্মীদের নিয়োগ প্রয়োজন হয়। করোনাভাইরাস
পরবর্তী সময়ে এ সেক্টরে আরো বেশি কর্মীর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে ভিসা চেক কুয়েত
ফিন্যান্স এবং ব্যাংকিং সেক্টরঃ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকিং এবং
ফাইনান্স সেক্টর বিশ্ববিখ্যাত এবং ব্যাংকিং ইনভেন্সমেন্ট এবং ইন্সুরেন্স খাতে
উচ্চতর প্রয়োজন হয়। এবং বিশেষ করে একাউন্টিং ফাইন্যান্সিয়াল, এনালাইসিস রিস্ক
ম্যানেজমেন্ট এবং ফাইনান্সিয়াল অ্যাডভাইজারের মতো পদগুলোতে চাকরির সুযোগ অনেক।
আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং এবং ট্যাক্স সিস্টেমে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন
প্রফেশনালদের চাহিদা এখানে অনেক বেশি।
ইঞ্জিনিয়ারিং ও গবেষণাঃ ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে বিশেষজ্ঞদের ব্যাপক
চাহিদা রয়েছে বিশেষ করে ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল এবং কেমিক্যাল
ইঞ্জিনিয়ারিং এর। সুইজারল্যান্ডে বৈজ্ঞানিক গবেষণা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট
গুরুত্ব প্রদান করা হয়। তাই রিসার্চ সাইন্টিস্ট কেমিস্ট এবং বায়োটেকনোলজি
বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজন। উচ্চ মানের গবেষণাগারের সুবিধা থাকায় সুইজারল্যান্ডে এই
খাতে কাজের সুযোগ দিন দিন বাড়ছে।
ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটিঃ সুইজারল্যান্ড একটি পর্যটন প্রিয় দেশ।
বছরের বিভিন্ন সময়ে হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসেন ফলে অতিথীয়তা হাতে প্রচুর
চাকরির সুযোগ রয়েছে। এবং বিশেষ করে হোটেল ম্যানেজমেন্ট রিসেপশননিস্ট এবং টুর
গাইড আরো রেস্টুরেন্ট কর্মীদের ব্যাপক প্রয়োজন। কাস্টমার সার্ভিসের দক্ষ
কর্মীদের এই খাতে বেশ চাহিদা রয়েছে।
শিক্ষা ও গবেষণাঃ সুইজারল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থা উচ্চমানের এবং
বৈশ্বিক শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে। শিক্ষক গবেষক এবং শিক্ষা প্রশাসনের মতো
পদগুলোতে এখানে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা
পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের শ্রমিকদের পাশাপাশি গবেষণা খাতেও বিশেষজ্ঞদের চাহিদা
ক্রমবর্ধমান।
সুইজারল্যান্ডের কোন কাজের বেতন কত
সুইজারল্যান্ডে বিভিন্ন কাজের বেতন অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। যা দেশটির
উচ্চ জীবন যাত্রার মান এবং কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার চাহিদাকে প্রতিফলিত করে।
জনপ্রিয় কাজের বেতন তুলে ধরা হলো, নিচে যা কর্মক্ষেত্র বা অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি
করে সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি তা ভিন্নভাবে দেখা যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ইউরোপ ভিসা এজেন্সি বাংলাদেশ
ফিনান্স এন্ড ব্যাংকিংঃ সুইজারল্যান্ডের ফিন্যান্স সেক্টর বিশ্ব
বিখ্যাত, বিশেষ করে জেনেভা এবং জুরিখে। ফিন্যান্স এবং ব্যাংকিং ক্ষেত্রে কাজ করা
ব্যক্তিদের বেতন উচ্চতর। একজন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার ফিনান্সিয়াল এনালিস্ট বছরে
ঘরে ১,১০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ সুইস ফ্রা আয় করতে পারেন। সিনিয়র লেভেলের
ম্যানেজার বেতন আরো বেশি হতে পারে যা ২,০০,০০০ সুইস ফ্রা এর উপরেও যেতে পারে।
আইন এবং আইনি পরামর্শঃ সুইজারল্যান্ডে আইনজীবী ও আইনি পরামর্শকদের
চাহিদা ব্যাপক, এবং বিশেষ করে আন্তর্জাতিক কর্পোরেশন এবং ট্যাক্স আইনি সম্পর্কিত
বিষয়ে একজন অ্যাসোসিয়েস্ট লেভেলের আইনজীবী বছরে গড়ে ১,০০,০০০ থেকে ১,২০,০০০
সুইস ফ্রা উপার্জন করতে পারেন। এবং যেখানে একজন সিনিয়ার আর্টনি বা পার্টনারের
বেতন ২,৫০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০ সুইস ফ্রা পর্যন্ত হতে পারে। আন্তর্জাতিক এবং
কর্পোরেট বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত বেতন পান।
ফার্মাসিউটিক্যালস এবং বায়োটেকঃ সুইজারল্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যাল এবং
বায়োটেকনোলজি সেক্টর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এক হাতে একজন রিসার্চ সাইন্টিস্ট বা
বায়োমেটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এর বার্ষিক বেতন ১,০০,০০০ থেকে
১,৪০,০০০ সুইস ফ্রা পর্যন্ত হতে পারে। উচ্চপদস্থ গবেষণা প্রদান বা
পরিচালকদের বেতন আর ও বেশি হতে পারে তবে ২,০০,০০০ সুইস ফ্রা বা তারও বেশি।
প্রকৌশল ও নির্মাণঃ সুইজারল্যান্ডে বিভিন্ন প্রকৌশল ক্ষেত্রে বিশেষ
করে মেকানিক্যাল এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের ভালো চাহিদা রয়েছে। একজন অভিজ্ঞ
প্রকৌশল বার্ষিক বেতন গড়ে ৯০,০০০ থেকে ১,৩০,০০০ সুইস ফ্রা হতে পারে। বৃহৎ
প্রকল্পের সাথে যুক্ত ইঞ্জিনিয়ার সিনিয়র যারা তাদের বেতন ১,৫০,০০০ থেকে
২,০০,০০০ সুইস ফ্রা পর্যন্ত হতে পারে।
এনার্জি এবং ইউটিলিটিসঃ সুইজারল্যান্ডে এনার্জি সেক্টরেও দক্ষ
পেশাদার দের চাহিদা রয়েছে। এবং রিনিউয়েবল এনার্জি বিশেষ করে সোলার এবং হাইড্রো
পাওয়ার নিয়ে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিশিয়ানদের গড় বেতন বছরের প্রায়
৯০,০০০ থেকে ১,২০,০০০ সুইস ফ্রা। উচ্চতর পদে থাকা ম্যানেজার বা প্রকল্প
পরিচালকদের বেতন ১,৫০,০০০ সুইস ফ্রা পর্যন্ত হতে পারে।
শিক্ষা ও একাডেমীয়াঃ সুইজারল্যান্ডের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর
মান বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত। অধ্যাপক এবং গবেষকদের বেতন ও এখানে আকর্ষণীয়। একজন
অধ্যাপকের বার্ষিক বেতন প্রায় ১,০০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ সুইস
ফ্রা এছাড়াও গবেষণা প্রকল্প পরিচালনা এবং বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চতর প্রশাসনিক
পদে থাকা ব্যক্তিদের বেতন প্রায় ১,৮০,০০০ থেকে ২,২০,০০০ সুইস ফ্রা পর্যন্ত হতে
পারে।
সুইজারল্যান্ড এর ভিসার দাম কত
সুইজারল্যান্ড এর ভিসা ফ্রি সাধারণত ভিসা ধরণ মেয়াদ এবং আবেদনকারীর জাতীয়তার
উপর নির্ভর করে। এবং পরিবর্তিত হয় এবং এখানে কিছু সাধারণ বিষয় এবং তাদের ফি
প্রয়োজনীয়তা এবং সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি আর ভিসা কিভাবে পাওয়া যেতে পারে তা তুলে ধরা হলো।
আরো পড়ুনঃ কাতার এয়ারলাইন্স টিকেট চেক
শেঙ্গেন টুরিস্ট ভিসাঃ সুইজারল্যান্ড একটি শেঙ্গেন ভুক্ত দেশ হওয়ায়
পর্যটকরা শেঙ্গেন টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এই ভিসা দিয়ে শেঙ্গেন
অঞ্চলের অন্যান্য দেশ ও ভ্রমণ করা যায়। শেঙ্গেন টুরিস্ট ভিসার ফি সাধারণত
৮০ ইউরো প্রায় ৮৫ সুইস ফ্রা তবে শিশুদের জন্য ফ্রি কম ৬ থেকে ১২ বছর বয়সীদের
জন্য ৪০ ইউরো বা ৪৫ সুইস ফ্রা কিছু ক্ষেত্রে যেমন গবেষক বা শিক্ষার্থী ক্ষেত্রে
এই ভিসার ফি মওকুফ করা যেতে পারে।
ওয়ার্ক পারমিট ভিসাঃ সুইজারল্যান্ডে কাজ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের
ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন করতে হয়। এই ভিসার ৯০ থেকে ১০০ সুইস ফ্রা। এছাড়া
কোম্পানি বা নিয়োগ কর্তাদের অনুমোদনপত্র অবশ্যক এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির ওয়ার্ক
পারমিট রয়েছে, যেমন- সবল প্রমিয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি বা বিশেষ ক্ষেত্রের কাজের
জন্য নির্ধারিত পারমিট। আবেদনকারীদের অভিজ্ঞতা এবং কাজের ধরন অনুযায়ী ফি এবং
শর্ত ভিন্ন হতে পারে।
স্টুডেন্ট ভিসাঃ সুইজারল্যান্ডে উচ্চ শিক্ষার জন্য আসতে ইচ্ছুক
শিক্ষার্থীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজন হয়। এবং স্টুডেন্ট প্রায় ৫০ থেকে
৭০ সুইস ফ্রা হয়ে থাকে, যা দেশের এবং প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে কিছুটা ভিন্ন
হতে পারে। তবে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি নিশ্চিতকরণের
প্রমাণ ফান্ডিং সাপোর্ট এবং স্বাস্থ্য বীমার প্রয়োজন হয়।
ফ্যামেলির রিউনিফিকেশন ভিসাঃ যারা সুইজারল্যান্ডে বাস করে তাদের
পরিবারের সদস্যদের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য ফ্যামিলির রিউনিফিকেশন ভিসার আবেদন
করতে হয়। এবং এই ভিসার ফি প্রায় ৬০-৯০ সুইস ফ্রা হতে পারে। এটি সাধারণত
দীর্ঘমেয়াদী ভিসা হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং এর জন্য পরিবারের সম্পর্ক প্রমাণ করার
নথি ফান্ডিং এবং বাসস্থান সুবিধার প্রমান প্রয়োজন হয়।
বিজনেস ভিসাঃ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণের জন্য
বিজনেস ভিসার প্রয়োজন হয়। এর ফি সাধারণত ৮০ সুইস ফ্রা যা প্রায় 80 ইউরো। এই
ভিসার জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়িক আমন্ত্রণ সংস্থার
প্রমাণপত্র এবং ভ্রমণের বিস্তারিত তথ্য দিতে হয়। এই ভিসা দিয়ে একক বাবু হবার
প্রবেশ করা সম্ভব এবং এটি সাধারনত ৯০ দিনের জন্য বৈধ থাকে।
ট্রানজিট ভিসাঃ যারা সুইজারল্যান্ডের ভ্রমণ না করে কেবল দেশটির মধ্য
দিয়ে অন্য কোন দেশে যাতায়াত করেন, তাদের জন্য ট্রানজিট ভিসা প্রয়োজন হতে পারে,
এবং এর ফ্রি সাধারণত ৬০ সুইস ফ্রা। ট্রানজিট ভিসা অল্প সময়ের জন্য বৈধ এবং এটি
শুধুমাত্র বিমানবন্দরের ট্রানজিট জোনে অবস্থানের অনুমতি দেয়। যদি যাত্রা দীর্ঘ
হয় বা শেঙ্গেন অঞ্চলে প্রবেশের প্রয়োজন হয় তাহলে শেঙ্গেন ভিসার প্রয়োজন হতে
পারে।
বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে
বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার জন্য খরচ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
যেমন ভিসা, বিমান, টিকিট, বাসস্থান, এবং দৈনন্দিন খরচ। বাংলাদেশ থেকে
সুইজারল্যান্ড যাওয়ার মোট খরচ সম্পর্কে ধারণা এবং সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের
চাহিদা বেশি এ বিষয় নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
ভিসা ফিঃ সুইজারল্যান্ডে যেতে শেঙ্গেন ভিসার প্রয়োজন হয়, এবং
বাংলাদেশ থেকে ভিসার জন্য প্রায় ৮০ ইউরো যা দেশের টাকায় ৯ হাজার থেকে দশ হাজার
টাকা খরচ হয়। এবং ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য কম প্রায় 40 ইউরো যা ৪৫০০
থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত, তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন শিক্ষার্থীদের জন্য এই ফি কিছুটা
কম হতে পারে। ফি এছাড়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত সার্ভিস পেয়ে এবং
ফটোকপি বা প্রয়োজনীয় নথির খরচ প্রায় ৫ হাজার থেকে সাত হাজার টাকা হতে পারে।
বিমান টিকিটঃ ঢাকা থেকে সুইজারল্যান্ড এর জেনেভা বা জুরিখের জন্য
একমুখী বিমান টিকিটের মূল্য সাধারণত ৬০ হাজার থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকার মধ্যে
হতে পারে। এবং এয়ারলাইন সিজন এবং বুকিং টাইম এর উপর নির্ভর করে এবং রিটার্ন
টিকিটের ক্ষেত্রে খরচ দ্বিগুণ হতে পারে। এবং আগাম টিকিট বুকিং করলে কিছুটা কম
খরচে পাওয়া যায় টিকিট। এছাড়া বিজনেস ক্লাসের টিকিটের খরচ ইকোনমি ক্লাসের
তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ যাওয়ার নিয়ম
স্বাস্থ্য বীমাঃ সুইজারল্যান্ডের ভ্রমণের জন্য স্বাস্থ্য বীমা
প্রয়োজন হয়, এবং এই বীমা খরচ ৫ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
কিছু বীমা কোম্পানি এক মাসের জন্য কভারেজ দিয়ে থাকে, তবে যারা দীর্ঘমেয়াদি
থাকতে চান, তাদের জন্য আরো বেশি খরচ হতে পারে। এবং স্বাস্থ্য বীমা থাকলে যে কোন
অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা পাওয়া যায়।
বাসস্থান খরচঃ সুইজারল্যান্ডে থাকা ব্যয়বহুল। একটি বাজেট হোটেলে এক
রাতের জন্য প্রায় আট হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা হতে পারে। এবং মিড রেঞ্জ হোটেলে
এক রাতের জন্য প্রায় খরচ হয় ১৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবং ভালো
মানের হোটেল বা ফাইভ স্টার হোটেলে খরচ আরো বেশি হতে পারে। যারা দীর্ঘমেয়াদে
থাকবেন তারা ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্ট নিতে পারেন যা মাসিক প্রায় এক থেকে দুই
লাখ টাকা করতে পারে।
দৈনন্দিন খরচঃ সুইজারল্যান্ডের খাবার ও দৈনন্দিন খরচ অনেক বেশি।
সাধারণ খাবারের জন্য প্রায় 20 থেকে 30 সুইস ফ্রা প্রায় ২৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা
লাগতে পারে। এবং যেকোনো ছোটখাটো ক্যাফে খাবার কিছুটা কম খরচে পাওয়া যেতে পারে।
এবং সুপার মার্কেট থেকে খাবার কিনে খেলে খরচ কমে যায় এবং দৈনিক প্রায় ৫০০০ থেকে
৭ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
পরিবহন খরচঃ সুইজারল্যান্ডে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট হলেও খরচ কিছুটা
বেশি। একটি দৈনিক পাস প্রায় ৭০-১০০ সুইস ফ্রা যা বাংলাদেশী টাকায় আট হাজার থেকে
১১ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যারা অনেক দিন থাকবেন তারা মাসিক পাস নিতে পারেন
যার খরচ প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ সুইস ফ্রা যা বাংলাদেশি টাকায় ১২০০০ থেকে ১৮ হাজার
টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া ভ্রমণের জন্য ট্রেনের টিকিট ট্যাক্সি রেন্ট এ
কারের খরচ যুক্ত থাকতে পারে।
সুইজারল্যান্ড এর সর্বনিম্ন বেতন কত
সুইজারল্যান্ডে সর্বনিম্ন বেতন নূন্যতম মজুরির উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় না,
কারণ এখানে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি নির্দিষ্ট মজুরি নেই। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে
স্থানীয় অন্যতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান
যুক্তির মাধ্যমে নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়। সুইজারল্যান্ডে সর্বনিম্ন
বেতন সংক্রান্ত নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো।
কেন্দ্রীয় ন্যূনতম মজুরিঃ সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় নির্ধারিত কোন
সার্বজনীন নূন্যতম মজুরি নেই। এর ফলে এখানে নূন্যতম বেতন শোরুম বাজারে চাহিদা এবং
স্থানীয় নিয়মের উপর নির্ভর করে। আর এ কারণে বেতন কাঠামো বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং
বিভিন্ন অঞ্চল অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। আর যদি কিছু ক্ষেত্রে সেক্টর ভিত্তিক
যুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, যা মূলত ট্রেড ইউনিয়ন ও কোম্পানির মধ্যে আলোচনা
সাপেক্ষ হয়ে থাকে।
অঞ্চলভিত্তিক নূন্যতম মজুরিঃ সুইজারল্যান্ড এর কিছু ক্যান্টনে যেমন-
জেনেভা এবং তিসিনো নির্দিষ্ট নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে, উদাহরণ স্বরূপ
জেনেভাতে প্রায় ২৩ সুইস ফ্রা প্রায় 28 ডলার মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা
মাসিক ঘরে প্রায় ৪,০০০ থেকে ৪,৩০০ সুইস ফ্রা হয়ে থাকে। এবং এই বেতনে মূলত
নির্ধারিত হয় জীবনযাত্রার খরচ বিবেচনা করে যেহেতু জেনেভা একটি ব্যয়বহুল শহর।
সেক্টরভিত্তিক বেতন চুক্তিঃ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন শিল্পের সেক্টর
ভিত্তিক যুক্তির মাধ্যমে সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এবং রিটেল
নির্মাণ ও হোটেল শিল্পে নিয়োগ কর্তা এবং ট্রেড ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে
বেতন নির্ধারণ করা হয়। এবং এই সেক্টর গুলিতে একজন কর্মী সাধারণত প্রতি ঘন্টা ১৮
থেকে ২৫ সুইস ফ্রা আয় করেন। এবং অভিজ্ঞতা দক্ষতা এবং কাজের সময় অনুযায়ী এ বেতন
কিছুটা বাড়ানো বা কমানো যেতে পারে।
শিক্ষানবিশ এবং স্বল্প দক্ষ কর্মীদের বেতনঃ সুইজারল্যান্ডের
শিক্ষানবিশ এবং স্বল্প দক্ষ কর্মীদের বেতন সাধারণত কম হয়। শিক্ষানবিশরা প্রায়
২০০০ থেকে ৩০০০ সুইস ফ্রা আয় করেন যা তাদের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষানবিশের ধরন
অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। স্বল্প দক্ষ কর্মীদের ক্ষেত্রে মাসিক বেতন প্রায় ৩,৫০০
থেকে ৪,০০০ সুইস ফ্রা হতে পারে বিশেষ করে রোস্তরা হোটেল এবং খুচরা বাণিজ্য
ক্ষেত্রে।
পার্টটাইম কর্মীদের বেতনঃ পার্টটাইম কাজের ক্ষেত্রে কর্মীদের সাধারণত
ঘন্টা ভিত্তিক বেতন প্রদান করা হয়। এই ক্ষেত্রে একজন পার্টটাইম কর্মী ঘরে প্রতি
ঘন্টায় 20 থেকে 30 সুইস ফ্রা উপার্জন করতে পারেন। এবং পার্টটাইম কাদের ক্ষেত্রে
বেতন কর্মের ধরন এবং দায়িত্ব অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের
জন্য পার্ট টাইম কাজের ভালো সুযোগ রয়েছে এবং তারা ঘন্টা প্রতি প্রায় ১৮ থেকে ২৫
সুইস ফ্রা আয় করতে পারেন।
খরচ ও জীবনযাত্রার মানঃ সুইজারল্যান্ডের সর্বনিম্ন বেতন মানুষ সেখানে
বাঁচার জন্য সর্বনিম্ন বেতনের মান। জেনেভা জুরিখ এবং লোশনের জীবন যাত্রার খরচ
অনেক বেশি ভালো স্থানীয় সরকার এবং ট্রেড ইউনিয়ন এগুলো নূন্যতম নির্ধারণ বেতন
করে থাকে। তবে সে ক্ষেত্রে বাসস্থান খাদ্য পরিবহন এবং অন্যান্য ব্যয়ের কথা
বিবেচনা করলে ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ সুইস ফ্রা আয় প্রয়োজন হয়।
সুইজারল্যান্ড এর কাজের ভিসা পেতে কি লাগে
সুইজারল্যান্ড এর কাজের ভিসা পেতে বেশ কিছু নির্দিষ্ট নথি এবং প্রয়োজনীয় শর্ত
পূরণ করতে হয়। সুইজারল্যান্ডের শ্রম বাজার অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং ভিসা
প্রক্রিয়া বেশ কঠোর। এবং এখানে সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা পেতে কি কি প্রয়োজন
তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
আরো পড়ুনঃ ইতালিতে কৃষি কাজের বেতন কত
বৈধ চাকরির প্রস্তাবঃ সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য
প্রথমে একটি বৈধ চাকরির প্রস্তাব থাকতে হবে। এবং সুইস নিয়োগ কর্তা সাধারণত এমন
প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে পারেন, যিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আবেদন করছেন।
তবে তাকে প্রমাণ করতে হবে যে স্থানীয় প্রার্থীর চেয়ে বিদেশি প্রার্থীর দক্ষতা
বেশি। এবং এই পদের জন্য তিনি যোগ্য এবং নিয়োগকর্তাকে স্থানীয় এবং বাজারের
প্রচেষ্টা চালানোর পরেও প্রয়োজনে কর্মী খুঁজে না হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করতে
হবে।
প্রয়োজনীয় নথি এবং তথ্যঃ কাজের ভিসার জন্য আবেদনের সাথে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জমা দিতে হয়। এর মধ্যে পাসপোর্ট এর কপি, নিয়োগ পত্র, আবেদনকারীর জীবন বৃত্তান্ত, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং প্রশিক্ষণের প্রমাণপত্র ও কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ এবং অন্যান্য পেশাগত প্রশংসাপত্র অন্তর্ভুক্ত থাকে। এছাড়াও আবেদনকারীর ফটোগ্রাফ মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং অপরাধমূলক রেকর্ড না থাকার সার্টিফিকেট ও প্রয়োজন হতে পারে।
ভিসা ফি এবং স্বাস্থ্য বীমাঃ কাজের ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ
করতে হয়। যা প্রায় ৯০ থেকে১০০ সুইস ফ্রা পর্যন্ত হতে পারে। এবং
সুইজারল্যান্ডের প্রবেশের আগে স্বাস্থ্য বীমা প্রয়োজন হয়, কারণ সুইজারল্যান্ডের
স্বাস্থ্য সেবা ব্যয়বহুল এবং ভিসা আবেদনের সময় স্বাস্থ্য বীমা নথির প্রমাণ
দেখানো জরুরী। আরো সুইজারল্যান্ডে কাজ করতে গেলে এমন একটি বীমা থাকতে হবে যা
চিকিৎসার ব্যয় কভার করতে পারে।
অর্থনৈতিক সক্ষমতাঃ আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হয়, যে
তিনি সুইজারল্যান্ডে থাকাকালীন তার নিজ খরচ চালানোর মতো আর্থিক সক্ষমতা
রাখেন।। এবং অনেক ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাই আর্থিক দায়িত্ব নেন, তবে আবেদনকারীর
ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা আর্থিক সাপোর্টের কাগজপত্র থাকলে এটি সহায়ক হয়। কিছু কিছু
ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা কোন ধরনের আর্থিক সাহায্য দিচ্ছেন কিনা তার তথ্য ও প্রয়োজন
হয়।
ভাষাগত দক্ষতাঃ সুইজারল্যান্ডের কাজের ক্ষেত্রে সাধারণত জার্মান
ফ্রেন্ড ইতালীয় বা ইংরেজি ভাষা দক্ষতা প্রয়োজন হয়। এবং আবেদনকারীর অবশ্যই এ
ভাষাগুলোর অত্যন্ত একটি জানা থাকতে হবে এবং ভাষাগত দক্ষতা সুইজারল্যান্ডের
বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন হতে পারে, যেমন জুরিখ বা বার্ন অঞ্চলে জার্মান ভাষা,
জেনেভাতে ফ্রান্স এবং তিশীনতে ইতালীয় ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন হয়। এবং কাজের
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ভাষা দক্ষতার প্রমাণসহ জমা দিতে হবে।
আবাসনের প্রমাণপত্রঃ সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য
আবেদনকারীকে সুইজারল্যান্ডে বৈধ আবাসনের প্রমাণপত্র দিতে হবে। অনেক সময় নিয়োগ
করতে বা কোম্পানি বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে সাহায্য করে। তবে আবেদনকারীকে এ
বিষয়ে দেখা হতে পারে এবং একটি নির্দিষ্ট বাসস্থানের চোখ দিয়ে ঠিকানা বা
কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত কোন বাসস্থানের নিশ্চয়তা কাগজপত্র জমা দিতে হয়।
সুইজারল্যান্ড এর ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
সুইজারল্যান্ড এর মুদ্রা সুইস ফ্রা মুদ্রার মান আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী ও
স্থিতিশীল বলে পরিচিত। সুইস ফ্রার মান বাংলাদেশের টাকার তুলনায় অনেক বেশি উঁচুতে
থাকে। বাংলাদেশী টাকার বিনিময় হার তার কারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
বর্তমান বিনিময় হারঃ সাধারণত ১ সুইস ফ্রা প্রায় ১২০ থেকে ১২৫
বাংলাদেশি টাকা হয়ে থাকে তবে বিনিময় হার নিয়মিত পরিবর্তিত হয়। বিশ্ব বাজারে
মুদ্রা চাহিদা সরবরাহ এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিনিময়ে হার প্রভাব ফেলে এবং সুইস
ফ্রা শক্তিশালী মুদ্রা হওয়ায় এর মান টাকার চেয়ে অনেক বেশি।
মুদ্রার স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রভাবঃ সুইজারল্যান্ডের অর্থনীতি
অত্যন্ত স্থিতিশীল এবং সুইস ফ্রা আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের এক শক্তিশালী মুদ্রা
হিসেবে পরিচিত। সুইজারল্যান্ডের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ এবং
ব্যাংকিং খাতের সাফল্য সুইস ফ্রাকে একটি নির্ভরযোগ্য মুদ্রায় পরিণত করেছে।
ফলে বাংলাদেশী টাকার তুলনায় সুইস ফ্রা এর মান বেশি হয় এবং বিনিময় হারেও
পার্থক্য দেখা যায়।
বিনিময় হার পরিবর্তনের কারণঃ সুইস ফ্রা বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার
নিয়মিত পরিবর্তিত হয় এবং এর পিছনে বিভিন্ন কারণ থাকে। যেমন সুইজারল্যান্ডে
অর্থনৈতিক মনদা বা বাংলাদেশ আমদানির চাপ বাড়লে মুদ্রার মান কমে যায়। সুইস
ফ্রার উপরে বিশ্ব অর্থনীতির চাপ পড়লে টাকার সাথে তার বিনিময় হার ও
পরিবর্তন হয়।
প্রবাসী ও পর্যটকদের জন্য প্রভাবঃ বাংলাদেশ থেকে যারা সুইজারল্যান্ডে
চাকরি বা পড়াশোনা করতে যায় তাদের জন্য বিনিময় হার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সুইস ফ্রা এর মান টাকার চেয়ে অনেক বেশি হয় বাংলাদেশি প্রবাসীদের আই দেশের
মুদ্রায় অনেক বড় পরিমাণ মনে হয়। এটি পরিবারকে অর্থ সহায়তা প্রধান এবং
সঞ্চয়ের জন্য সহায়ক। এবং সুইজারল্যান্ডের বেশি খরচ অনুভব করেন এবং তাদের কে আরো
বাংলাদেশি টাকায় সুইস ফ্রাতে রূপান্তরিত করতে হয়।
আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রভাবঃ সুইজারল্যান্ড এবং বাংলাদেশের
মধ্যে আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে বিনিময় হার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং
সুইস ফ্রার মান অনেক বেশি তাই সুইজারল্যান্ড থেকে পণ্য আমদানি করলে সে পণ্যের খরচ
বেশি বড়। এবং বাংলাদেশ যদি সুইজারল্যান্ডে কিছু রপ্তানি করে তবে টাকার মান কম
হয় রপ্তানির ক্ষেত্রে সুবিধা হতে পারে।
বিনিময় হার পরিবর্তনের ঝুঁকিঃ বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুইস
ফ্রার মান এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তনের
ঝুঁকি সৃষ্টি করে এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যেমন সুদের হার,
বিশ্ববাজারে সংকট এবং মুদ্রাস্ফীতির মত বিষয়গুলিও বিনিময় হারের উপর প্রভাব
ফেলে। এবং সুইস ফ্রার মান বৃদ্ধির কারণে আমদানি খরচ বেড়ে যেতে পারে যার প্রভাব
বাংলাদেশের বাজারেও পড়ে।
সুইজারল্যান্ড মুদ্রার নাম কি
সুইজারল্যান্ড এর মুদ্রার নাম হল, সুইস ফ্রা কেবলমাত্র সুইজারল্যান্ডে নয়
লিশটেস্টাইনেও মুদ্রা বৈধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। । এটি একটি অত্যন্ত স্থিতিশীল এবং
শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে বৈশ্বিক মুদ্রা বাজারের বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে। এবং
সুইস ফ্রার মান প্রায় উচ্চ অবস্থায় থাকে এবং এটি বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের
জন্য নির্ভরযোগ্য মুদ্রা হিসেবে বিবেচিত হয়।
সুইস ফ্রার মজবুত অবস্থানের কারণ হলো, সুইজারল্যান্ডের অর্থনৈতিক স্থিতিশীল এবং
তাদের স্বাধীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস
ন্যাশনাল ব্যাংক অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মুদ্রার মান নিয়ন্ত্রণ করে।
সুইজারল্যান্ডে নিরপেক্ষ অর্থনীতি এবং রাজনীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতির সংকট এর
সময় সুইস ফ্রার ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা থাকে। ফলে মুদ্রাটির মান আন্তর্জাতিক
মুদ্রা সাথে তুলনামূলকভাবে উঠানামা কম করে।
বিশ্বব্যাপী লেনদেন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুইস ফ্রার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে। এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকেও অনেক দেশ সুইস ফ্রার বিনিয়োগ করে। কারণ
এটি আন্তর্জাতিকভাবে একটি নিরাপদ মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃত। এবং সুইজারল্যান্ড
ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং মুদ্রার স্থিতিশীলতা এই মুদ্রাকে বৈশ্বিক বিনিয়োগের জন্য
একটি জনপ্রিয় পছন্দে পরিণত করেছে।
সুইজারল্যান্ড এর কাজ সম্পর্কিত সাধারণ জিজ্ঞাসা ও প্রশ্ন
প্রশ্নঃ সুইজারল্যান্ড এর মাসিক বেতন কত?
উত্তরঃ সুইজারল্যান্ডের মাসিক বেতন আট থেকে বারো লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি বেতনের চাকরি কোনটি?
উত্তরঃ সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি বেতনের চাকরি হল নিউরোসার্জন। তাছাড়া
সুইজারল্যান্ডে ডাক্তারদের সবচেয়ে বেশি বেতন দেওয়া হয় অর্থাৎ বলা যায়
সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বেতনের চাকরি হলো ডাক্তার।
প্রশ্নঃ সুইজারল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি চাওয়া চাকরি?
উত্তরঃ সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বেশি চাওয়া চাকরি হলঃ কনস্ট্রাকশন কাজ এবং দক্ষ
শ্রমিক আরো নির্মাণ ও স্বাস্থ্যসেবা। সুইজারল্যান্ডের সাধারণত বিদেশী শ্রমিকদের
বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়।
প্রশ্নঃ সুইজারল্যান্ডে কোন ডাক্তারের চাহিদা বেশি?
উত্তরঃ সুইজারল্যান্ড বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চাহিদা বেশি।
লেখক এর মন্তব্য
সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি, আজকেরে সম্পূর্ণ পোস্টটিতে আপনারা
সুইজারল্যান্ডে কোন কাজে চাহিদা বেশি ও সুইজারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এবং তাছাড়াও সুইজারল্যান্ডে যেতে কত টাকা লাগে ও
সুইজারল্যান্ড কোন কাজের বেতন কত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করছি আপনারা সুইজারল্যান্ড কাজের বিষয় সম্পর্কিত তথ্য বিস্তারিতভাবে জানতে
পেরেছেন এবং এরকম তথ্যমূলক পোস্ট যদি আরো পেতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো
করুন কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। 37147
ট্রিক্সপ্রমোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url