মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় ১৪ টি

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায়মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় খুঁজছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। অনেক সময় মুখে অতিরিক্ত তেল তৈরি হয়ে ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে। তবে, কিছু সহজ এবং কার্যকর ঘরোয়া উপায় রয়েছে যা আপনার ত্বককে তাজা ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করবে।
এই পোস্টে আমরা এমন কিছু প্রাকৃতিক উপায় নিয়ে আলোচনা করব, যা আপনার ত্বককে পুনরায় স্বাভাবিক ও সুস্থ করে তুলতে পারে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্র : মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় 

মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায়

মুখের তৈলাক্ত ভাব অনেকের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অতিরিক্ত তেল ত্বকের পোর বন্ধ করে ব্রণ বা ব্ল্যাকহেডস সৃষ্টি করতে পারে। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে আপনি কয়েকটি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে পারেন যা ত্বককে পরিষ্কার এবং তেলমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। সবচেয়ে প্রথমে, ত্বক পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন ভালো একটি ফেস ওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। ফেস ওয়াশটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর করবে এবং ত্বককে শুদ্ধ রাখবে। এরপর, মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন। 

এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বককে সতেজ রাখবে। এছাড়া, টমেটোর রসও ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমাতে সাহায্য করে। তবে, শুধু উপাদান ব্যবহার করলেই হবে না, আপনার জীবনযাপনও কিছুটা পরিবর্তন প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পানি পান করা, সঠিক খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

পুরুষের মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার উপায়

পুরুষদের ত্বক সাধারণত একটু বেশি তৈলাক্ত হয়, বিশেষত মুখের অংশে। সুতরাং, তাদের জন্য মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় আরো গুরুত্ব সহকারে অনুসরণ করা প্রয়োজন। প্রথমে, নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে, এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুতে থাকুন। গরম পানি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল দূর করে এবং ঠাণ্ডা পানি ত্বককে শীতল রাখে। পুরুষদের ত্বকে তেলের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য শসা ও গোলাপ জল খুবই কার্যকর। 

শসার রস ত্বকে প্রাকৃতিক শীতলতা আনবে, আর গোলাপ জল ত্বকের পোরকে ক্লিয়ার করবে। তাছাড়া, চা গাছের তেলও ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। তবে, অতিরিক্ত তেল শোষণকারী পণ্য ব্যবহার করার সময় খুব সতর্ক থাকা উচিত, কারণ ভুল পণ্য ত্বক শুষ্ক করে ফেলতে পারে। তাই ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ ব্যালান্স বজায় রাখতে চেষ্টা করুন।

তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায়

তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। বিশেষ করে যদি ত্বকের তেল পোরে জমে যায়, তাহলে ব্রণ সৃষ্টি হয়। তবে, তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে আপনি কিছু কার্যকর পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। প্রথমত, ত্বক পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে, লেবু ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করবে এবং ব্রণ প্রতিরোধে সহায়তা করবে। 

এছাড়া, গোলাপ জলও একটি চমৎকার টোনার হিসেবে কাজ করে, যা ত্বকের পোর খুলে দেয় এবং ত্বককে শীতল রাখে। ব্রণ কমানোর জন্য, একটি প্রাকৃতিক স্ক্রাব ব্যবহার করে সপ্তাহে অন্তত একবার ত্বক এক্সফোলিয়েট করা প্রয়োজন। এতে ত্বক থেকে মৃত কোষগুলো বের হয়ে যায়, আর ব্রণ কমে যায়।

মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপাদান

মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার একটি নিরাপদ এবং কার্যকরী পদ্ধতি। ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেওয়ার পাশাপাশি, এই উপাদানগুলি ত্বককে স্বাস্থ্যকর এবং সতেজ রাখে। এখানে কিছু প্রাকৃতিক উপাদান তুলে ধরা হলো, যা আপনার ত্বকের তেল কমাতে সাহায্য করবে:
  • তুলসি পাতা: তুলসি পাতা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী, কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বককে সতেজ রাখে। তুলসী পাতা এবং পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। এটি ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমাবে।
  • লেবু ও মধু: লেবু ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং ত্বককে পরিষ্কার রাখে, আর মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে। লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন এবং ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমাবে এবং ত্বককে মসৃণ রাখবে।
  • পেঁপে: পেঁপে ত্বকের জন্য একটি শক্তিশালী উপাদান, যা অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বককে পরিষ্কার রাখে। পেঁপে একাধিক ভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস সমৃদ্ধ, যা ত্বককে মসৃণ এবং তরুণ রাখতে সাহায্য করে। পেঁপে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগান, ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল কমাতে সাহায্য করবে।
  • দই ও বেসন: দই এবং বেসন ত্বক পরিষ্কার করতে এবং অতিরিক্ত তেল শুষে নিতে সাহায্য করে। দই ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, এবং বেসন ত্বকের তেল শুষে নেয়। এক চামচ বেসনের সাথে এক চামচ দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বককে কোমল এবং মসৃণ রাখবে, পাশাপাশি তৈলাক্ত ভাব কমাবে।
  • শসার রস: শসার রস ত্বককে ঠাণ্ডা রাখে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমায়। এটি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং ত্বকের পোরের মধ্যে জমে থাকা তেল শুষে নেয়। শসার রস তুলার সাহায্যে ত্বকে লাগিয়ে কিছু সময় রাখুন। পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
  • অ্যালোভেরা (ভালো লতা): অ্যালোভেরা গ্লাইকোপ্রোটিন নামে একটি উপাদান ধারণ করে, যা ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং ত্বককে শান্ত রাখে। অ্যালোভেরার গাছ থেকে শাঁস বের করে সরাসরি ত্বকে লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে এটি ত্বককে মসৃণ এবং তেলমুক্ত রাখতে সহায়তা করবে।

তুলসী পাতা ব্যবহার করে ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ

তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল গুণ, যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাতে সাহায্য করে। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে তুলসী পাতার রস খুবই উপকারী। তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি, এর রস বা পেস্ট ত্বকে লাগালে ত্বকের পোর পরিষ্কার হয় এবং তেল শোষণ হয়ে ত্বক হয়ে ওঠে সঠিকভাবে হাইড্রেটেড। 

তুলসী পাতা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পূর্ণ, যা ত্বকের পক্ষে খুব ভালো। তুলসী পাতা ব্যবহার করার পর, ত্বক যদি আর্দ্র অনুভূত হয়, তাহলে কিছুটা শসার রস মিশিয়ে ত্বককে শীতল করতে পারেন। এটি ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে এবং ত্বককে একদম তাজা রাখবে।

বেসন ও দইয়ের মিশ্রণ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা

মুখের-তৈলাক্ত-ভাব-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়বেসন ও দই, এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদান ত্বক পরিষ্কার এবং তাজা রাখার জন্য আদর্শ। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে এটি বেশ কার্যকর। প্রথমে, একটি পাত্রে দুই চামচ বেসন নিন এবং এতে এক চামচ দই মেশান। দই ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়, আর বেসন ত্বক থেকে ময়লা ও তেল দূর করতে সাহায্য করে। এই প্যাকটি মুখে লাগানোর পর পাঁচ থেকে দশ মিনিট রেখে দিন এবং শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এই মিশ্রণটি ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বককে পরিষ্কার ও মসৃণ রাখে। ত্বকের যত্নে এই ধরনের প্রাকৃতিক উপাদানগুলি অনেক বেশি উপকারী, কারণ এতে কোনো রাসায়নিক উপাদান নেই। নিয়মিত এই প্যাকটি ব্যবহারের ফলে ত্বক হয়ে উঠবে নরম ও তাজা।

গোলাপজল ও লেবুর রসের মিশ্রণ

গোলাপজল এবং লেবুর রস, এই দুটি উপাদান একত্রিত হলে ত্বকের জন্য এক চমৎকার টোনার হিসেবে কাজ করে। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার ঘরোয়া উপায় হিসেবে এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাতে এবং পোর পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। গোলাপজলে রয়েছে শীতলকরণ গুণ, যা ত্বককে ঠাণ্ডা রাখে, আর লেবুর রস ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বককে সতেজ রাখে।

একটি পরিষ্কার বাটিতে গোলাপজল এবং লেবুর রস মিশিয়ে তুলার সাহায্যে মুখে লাগিয়ে নিন। এটি ত্বককে শীতল করে, এবং ত্বকের পোরও ক্লিয়ার করে। যদি আপনার ত্বক তৈলাক্ত হয়ে থাকে, তাহলে দিনে একবার এই টোনার ব্যবহার করলে ত্বক তাজা এবং তেলমুক্ত থাকে। এটি ব্রণ এবং ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে।

মধু ও দারুচিনির প্যাক

মধু এবং দারুচিনি, এই দুটি উপাদান ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন‍্য বিভিন্ন উপায় হিসেবে এটি একটি চমৎকার প্যাক তৈরি করতে পারে। মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। আর দারুচিনি ত্বকের ব্রণ এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করে, কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ।

এটি ব্যবহার করতে, এক চামচ মধুর সাথে এক চিমটি দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই প্যাকটি ব্যবহারের ফলে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব অনেকটা কমে যাবে এবং ত্বক হবে সুস্থ ও মসৃণ।

চন্দন ও মুলতানি মাটি দিয়ে ত্বক শীতল করা

চন্দন এবং মুলতানি মাটি ত্বককে ঠাণ্ডা রাখে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাতে সাহায্য করে। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার পদ্ধতি হিসেবে এটি একটি চমৎকার প্যাক হতে পারে। চন্দন ত্বকের জন্য একটি প্রাকৃতিক শীতলকরণ উপাদান, যা ত্বককে শান্ত করে। আর মুলতানি মাটি ত্বক থেকে ময়লা, তেল ও অন্য কোনো অপ্রয়োজনীয় উপাদান দূর করতে সহায়ক।

একটি পাত্রে মুলতানি মাটি ও চন্দন গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। তাতে একটু গরম পানি যোগ করুন যাতে প্যাকটি একটানা ত্বকে লাগানো যায়। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন, তারপর মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের তেল কমাতে সহায়তা করবে এবং ত্বক থাকবে শীতল ও সতেজ।

মেথি ও হলুদের পেস্ট ত্বককে তাজা রাখে

মেথি এবং হলুদ, এই দুটি প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে তাজা ও সুস্থ রাখে। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে নানা উপায় হিসেবে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। মেথিতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ, যা ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, আর হলুদের অ্যান্টিসেপ্টিক গুণ ত্বককে পরিষ্কার ও মসৃণ রাখে।

একটি পাত্রে মেথি ও হলুদ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং তা মুখে লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় এবং ত্বককে সুন্দর ও তাজা রাখে। নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দ্রুত কমে যাবে এবং ত্বক মসৃণ ও তাজা থাকবে।

আদা ও মধুর সাহায্যে তৈলাক্ত ত্বক কমানো

আদা এবং মধু, এই দুটি উপাদান ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আদা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি, যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখে এবং তার অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ ত্বকের সমস্যাগুলি দূর করতে সাহায্য করে। তৈলাক্ত ত্বক কমানোর জন্য আদা এবং মধুর মিশ্রণ একটি প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে দারুণ কার্যকরী।

আপনি প্রথমে আদার রস বের করে একটি ছোট পাত্রে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি তুলার সাহায্যে ত্বকে লাগিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করুন। আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস ত্বকের তেল শুষে নেয় এবং মধু ত্বককে শীতল রাখে। ২০ মিনিট পর হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ত্বক পরিষ্কার ও তেলমুক্ত থাকবে।

লেবু ও মধুর মিশ্রণ দিয়ে মুখ ধোয়া

লেবু এবং মধু একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বকের জন্য এক কার্যকরী প্যাক তৈরি হয়। লেবুর মধ্যে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যা ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে পরিষ্কার রাখে। মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। এই দুই উপাদান একত্রিত হলে, এটি ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে পারে।

একটি ছোট পাত্রে এক চামচ মধুর সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তারপর এই মিশ্রণটি ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করুন। এতে ত্বকের তেল শুষে যাবে এবং ত্বক হবে সতেজ। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটি আপনার ত্বককে দীর্ঘ সময় তাজা রাখবে এবং তেলমুক্ত করবে।

শসার রস দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা

মুখের-তৈলাক্ত-ভাব-দূর-করার-ঘরোয়া-উপায়শসা, ত্বককে ঠাণ্ডা এবং শীতল রাখার জন্য এক প্রাকৃতিক উপাদান। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমায়। শসার রসে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণ, যা ত্বককে শান্ত রাখে এবং ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়।

প্রথমে শসা ভালোভাবে ধুয়ে তার খোসা ছাড়িয়ে কেটে ছোট টুকরো করে নিন। এরপর শসার টুকরোগুলো ব্লেন্ড করে রস বের করে নিন। এই রসটি তুলার সাহায্যে মুখে লাগিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করুন। শসার রস ত্বককে পরিষ্কার করবে এবং ত্বক থেকে তেল শুষে নিয়ে তা সতেজ রাখবে। নিয়মিত শসার রস ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে উঠবে নরম এবং মসৃণ।

তেল দূর করার জন্য ডাবের পানি ব্যবহার

ডাবের পানি একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং অতিরিক্ত তেল দূর করতে সহায়তা করে। ডাবের পানি ত্বককে ঠাণ্ডা রাখে এবং ত্বকের পোর খোলার মাধ্যমে অতিরিক্ত তেল শোষণ করে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং ত্বকের উপরিভাগকে পরিষ্কার রাখে।

প্রথমে একটি ডাবের পানি বের করে নিন এবং তুলার সাহায্যে মুখে লাগান। কিছু সময় অপেক্ষা করুন, তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতিটি ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে এবং ত্বককে শীতল ও তাজা রাখবে। ডাবের পানির ব্যবহারে ত্বক ফ্রেশ এবং সতেজ হয়ে উঠবে।

পরিশেষে আমার মতামত

আমি মনে করি, প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ এবং কার্যকরী। আমাদের ত্বক অনেক কিছু সহ্য করতে পারে, কিন্তু রাসায়নিক উপাদানগুলো দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, আমি বিশ্বাস করি যে, আদা ও মধুর সাহায্যে তৈলাক্ত ত্বক কমানো, লেবু ও মধুর মিশ্রণ দিয়ে মুখ ধোয়া, শসার রস দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা, এবং ডাবের পানি ব্যবহার করা এগুলোর মতো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করলে ত্বক ভালো থাকবে এবং ত্বকের সমস্যা কমবে।

আমাদের ত্বককে যত্ন নেওয়ার জন্য প্রয়োজন একটু সময় এবং সঠিক উপাদান। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক তাজা, পরিষ্কার এবং সুস্থ থাকে। তবে, খুব বেশি কোনো উপাদান ব্যবহার না করাই ভালো, কারণ তা ত্বকের প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে নষ্ট করতে পারে। তাই, উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার ত্বককে সুন্দর ও তেলমুক্ত রাখতে পারবেন। [33879]

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ট্রিক্সপ্রমোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url