ডায়রিয়া হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে কি তার বিস্তারিত
ডায়রিয়া হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে কি সে সম্পর্কে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা
হয়েছে। এবং ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ কি তার থেকে মুক্তির উপায় কি সে সম্পর্কে ও
বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এবং ডায়রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে আপনি যদি আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে
অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
পেজ সূচিঃ ডায়রিয়া হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে এবং তার সাথে কাঁচা কলাও খেতে পারেন দুটোই
ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য খুব উপকারি। পাকা কলা সহজেই হজম হয়ে থাকে এবং কলাতে
প্রচুর পরিমান পটাশিয়াম রয়েছে যা একজন মানুষের শরীরের পানি ও ইলেকট্রোলাইটের
ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে।
এবং পাকা বা কাঁচা কলা ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য খুব উপকারি। কাঁচা কলা একজন
মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে এবং তার সাথে হজম
শক্তি বাড়াতে ও সাহায্য করে থাকে।
ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হওয়ার ফলে শরীর অনেক দূর্বল হয়ে পড়ে এবং পানিশূন্যতা
দেখা দেয় এক্ষেত্রে আপনি পরামর্শ অনুযায়ী পাকা কলা খেতে পারেন কারন কলাতে প্রচুর
পটাশিয়াম রয়েছে যা শরীরের শক্তি যোগাতে সাহায্য করে থাকে। এবং ডায়রিয়া
নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনি কাঁচা কলা ভর্তা করে ভাতের সাথে খেতে পারেন ভালো ফল পাবেন।
ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ
ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ এর প্রধান উপসর্গ হচ্ছে মলত্যাগের জন্য প্রচন্ড চাপ অনুভব
করা এবং ঘনঘন পাতলা পায়খানা হওয়া। কিন্তু গবেষকদের মতে পাতলা পায়খানা হলেই
ডায়রিয়া হয়না, যদি কারো দিনে ৩ বারের বেশি পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে তখন তাকে
ডায়রিয়া লক্ষন বলা হয়ে থাকে।
এবং এ ছাড়াও পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব হওয়া, পেটে চাপ অনুভব হওয়া, জ্বর হওয়া, তরল
পানির মতো মল হওয়া এবং ফ্যানার মত হওয়া, রক্ত দেখা দেয় মলে এরকম হওয়া ইত্যাদি
লক্ষন দেখলে বুঝবেন আপনার ডায়রিয়া হয়েছে।
ছোটদের ডায়রিয়া হলে করণীয়
ছোটদের ডায়রিয়া হলে করণীয় হচ্ছে, প্রথমে আপনাকে আধা সের বা ১ লিটার পানিতে
খাবার স্যালাইন ১ প্যাকেট ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। যদি বয়স দুই বছরের নিচে হয়ে
থাকে তাহলে যতবার পাতলা পায়খানা হবে এবং পাতলা পায়খানা হওয়ার পরে ততোবার ১০ থেকে
২০ চা চামচ খাবার স্যালাইন মেশানো পানি খাওয়াতে হবে।
এবং যাদের দুই বছরের বেশি বয়স তাদের যদি পাতলা পায়খানা হয়, যতবার পাতলা পায়খানা
হবে ততোবার ২০ থেকে ৪০ চা চামচ খাবার স্যালাইন মেশানো পানি খাওয়াতে হবে। তাই
ছোটদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হলে আপনি প্রাথমিক ভাবে এইভাবে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে
পারেন ভালো ফল পাবেন। এর পর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করবেন।
ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া যাবে তবে অবশ্যই মনে রাখবেন জেনো ডিম আধা সিদ্ধ না হয়।
কিন্তু কেউ কেউ মনে করে ডায়রিয়া হলে ডিম খাওয়া যাবেনা আবার কেউ মনে করে খাওয়া
যাবে। তবে ডিম পুরোপুরি ভালো ভাবে সিদ্ধ করে তারপর খাবেন। কাঁচা বা আধা কাঁচা
খাবার খাওয়া যাবেনা যেমন মাংস, ডিম এরকম খাবার আধা কাঁচা খাবেন না।
এবং ডায়রিয়া হলে শরীর অনেক দূর্বল হয়ে পড়ে এই সময় শরীরে শক্তির প্রয়োজন হয়ে থাকে।
এবং গবেষকদের মতে ডিম কিন্তু প্রোটিনের ভালো উৎস যা শরীরে প্রোটিনের অভাব দূর
করতে সাহায্য করে থাকে এবং শরীরে শক্তি যোগায়। এ জন্য আপনি পরানর্শ অনুযায়ী একটি
পুরোপুরি সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন।
ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হলে কি ফল খাওয়া যাবে, হ্যাঁ তবে সব ফল খাওয়া যাবেনা। ডায়রিয়ার হলে
পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং অনেক পটাশিয়ামের ও সোডিয়ামের প্রয়োজন পড়ে। এক্ষেত্রে
আপনি ফলের রস খেতে পারেন, যেমনঃ কলা, পাকা পেঁপে, ডাব, কমলা এবং ডামিল ইত্যাদি
ফলের রস করে নিয়ম করে খেতে পারেন ভালো ফল পাবেন।
আরও পড়ুনঃ ক্যালসিয়ামের অভাবে কোন রোগ হয়
ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না
ডায়রিয়া হলে কি কি খাওয়া যাবে না তা হচ্ছে, অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার,
অতিরিক্ত মসলা যুক্ত খাবার, শাকসবজি, দুধের তৈরী খাবার, অ্যালকোহল এবং
কার্বনেইডেট পানীয়, আধা কাঁচা মাংস, ডিম ইত্যাদি এডিয়ে চলবেন। আপনার যদি ডায়রিয়া
হয়ে থাকে তাহলে এই সব খাবার এডিয়ে চলবেন। এসব খাবারের ফলে শরীরের ক্ষতিকর প্রভাব
পড়ে।
ডায়রিয়া রোগীকে কখনো শাকসবজি খাইতে দিবেন না। কারন শাকসবজি পায়খানকে নরম করে ফলে
আরো পাতলা পায়খানা বাড়ে এ জন্য শাকসবজি দিবেন না। এবং ডায়রিয়া রোগীদের জন্য
অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার ও মসলা যুক্ত খাবার ক্ষতিকর। এ জন্য আপনার ডায়রিয়া হলে
পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্য গ্রহন করবেন।
বড়দের ডায়রিয়া হলে করণীয় কি
বড়দের ডায়রিয়া হলে করণীয় কি? বড়রা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হলে তাদের করনীয়
হচ্ছে, পরিষ্কার পরিছিন্ন থাকতে হবে, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে
যেনো হাতে কোন জীবানু না থাকে তারপর খাবার গ্রহন করতে হবে। এবং বড়দের ডায়রিয়া বা
পাতলা পায়খানা হলে, যতবার পাতলা পায়খানা হবে ততো বার খাবার স্যালাইন পানি খেতে
হবে।
কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে পরিমান মতো খাওয়াতে হয়। এ জন্য অতিরিক্ত তেল যুক্ত খাবার
ও মসলা যুক্ত খাবার, অ্যালকোহল পানীয় এগুলো এডিয়ে চলতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ
অনুযায়ী চলবেন ও খাদ্য গ্রহন করবেন তাহলে ভালো ফল পাবেন।
ডায়রিয়া থেকে মুক্তির উপায়
ডায়রিয়া থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে আপনাকে প্রথমে কম আঁশ যুক্ত খাবার খেতে হবে।
যে খাবার একজন মানুষের শরীরে সহজে হজম হবে এরকম খাদ্য গ্রহন করতে হবে এবং শরীরকে
গরম না করে ঠান্ডা রাখবে এমন খাদ্য গ্রহন করতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই দুধ বা দুধের তৈরী খাদ্য এবং শাকসবজি এডিয়ে চলতে হবে।
বিশেষ করে যাদের পাতলা পায়খানা বেশি পরিমানে হয়ে থাকে তাদের জন্য ভাজা পোড়া জাতীয়
খাবার খাওয়া ও এডিয়ে চলা উচিত।
এবং তাছাড়াও ডায়রিয়া হলে আপনি আতপ চালের বা পোলাও চালের জাউ ভাত রান্না করে খেতে
পারেন কিন্তু অবশ্যই ভাত জেনো নরম হয়। এবং এই ভাতের সাথে আপনি কাঁচা কলা বা আলু
ভর্তা করে খেতে পারেন তবে ভর্তাতে পিয়াজ ও কাঁচা মরিচ দিবেন না। তাহলে আপনার
ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করবে।
এবং ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতা দেখা দেয়, পটাশিয়ামের ও সোডিয়ামের প্রয়োজন হয়ে থাকে
এক্ষেত্রে আপনি একটি পাকা কলা খেতে পারেন এবং ডাবের পানি ও খেতে পারেন। এবং ফলের
রস যেমনঃ কমলা, পাকা পেঁপে, ডালিম ইত্যাদি খেতে পারেন।
এবং ডায়রিয়া হলে অবশ্যই আপনাকে পরিষ্কার পরিছিন্ন থাকতে হবে। বাথরুম করার পর
অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। তাছাড়াও খাবারের আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত
ভালো ভাবে পরিষ্কার করে খাবার খেতে হবে।
এইভাবে নিয়ম করে যদি আপনি চলতে পারেন তাহলে আপনার ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করবে।
তবে বেশি পরিমান হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং পরামর্শ অনুযায়ী চলবেন।
শেষ কথাঃ ডায়রিয়া হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে
ডায়রিয়া হলে পাকা কলা খাওয়া যাবে কি সে সম্পর্কে ইতিমধ্যে আপনারা জেনে
গিয়েছেন। এবং ডায়রিয়ার যাবতীয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনেছেন। এবং তাই আপনি যদি
একজন স্বাস্থ্যে সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই উপরের বর্ণিত পরামর্শ
অনুযায়ী চলবেন তাহলে ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করবে।
এবং আজকের এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যেমে আপনাকে যদি ভালো লেগে থাকে, তাহলে এরকম আরো
তথ্য পেতে আমার এই ওয়েবসাইট অবশ্যই বেশি বেশি ভিজিট করবেন।
ট্রিক্সপ্রমোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url