চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানুন
চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার এবং তার পাশাপাশি ব্রণের জন্য নিম পাতার
ব্যবহার সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যেমে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।
এবং তাছাড়াও নিম পাতার বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ও বিস্তারিত ভাবে
আলোচনা করা হয়েছে। এবং নিম পাতার সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে হলে নিচের শেষ
পর্যন্ত পড়ুন।
পেজ সূচিঃ চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
- চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
- ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
- ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
- নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
- নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
- তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার
- চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
- নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয়
- নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়
- নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
- শেষ কথাঃ চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
- চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, চুলের যত্নে নিম পাতা খুব কার্যকারী। প্রথমে আপনি রাতে ১ লিটার পানি ফুটিয়ে নিবেন তারপর ৪০টির মতো নিম পাতা ফুটনো পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখবেন। এবং এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলবেন এরকম করে আপনি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করবেন দেখবেন আপনার মাথার খুশকি জনিত চুলকানি দূর করবে আপনার চুল ভালো থাকবে।
- এবং তাছাড়াও আপনি ১ লিটার পানি ফুটিয়ে নিয়ে সেখানে ৪০ টি পাতা সারারাত ভিজিয়ে রাখবেন। এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলবেন এবং পাতা গুলো ব্লেন্ড করে নিয়ে তার সাথে মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরী করে নিবেন। তারপর এই প্যাকটি চুলে ৩০ মিনিট দিয়ে রাখুন এবং তারপর স্বাভাবিক শ্যাম্পু করবেন। এইটা সপ্তাহে একবার করবেন।
- এবং ২ চা চামচ মেথি ৩ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখবেন তার সাথে ৪০টি নিম পাতা নিয়ে একটু পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে একটি প্যাক তৈরী করে নিবেন। এবং এই প্যাক এর সাথে ১ চা চামচ টক দই, ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিবেন। প্যাকটি ব্যবহারের আগে তেল দিয়ে নিবেন তারপর প্যাকটি চুলে দিয়ে ১ ঘন্টা রাখবেন এবং শেষে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করবেন।
- ১ কাপ নারিকেলের তেল হালকা গরম করে নিয়ে তার সাথে ১ কাপ নিমের তেল মিশিয়ে নিবেন। এবং রাতে ঘুমানোর আগে চুলে ম্যাসাজ করে সারারাত রেখে দিবেন। সকালে উঠে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং এইটা সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার করতে পারেন। দেখবেন আপনার চুল উজ্জ্বল এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার তা জানলে আপনি অবাক হবেন কারন ব্রণের জন্য নিম পাতা খুব কার্যকারী। আপনার ব্রণের দাগ দূর করার জন্য নিম পাতা
প্রথমে শুকিয়ে নিয়ে তারপর গুঁড়া করে নিতে হবে এবং সেই গুঁড়া অ্যালেভেরা পাতার
ভিতরের জেলের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর ১০ থেকে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখতে
হবে এবং শেষে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ব্রণের সমস্যা দূর করতে আপনি নিম পাতার সাথে চন্দন মিশিয়ে প্যাক তৈরী করে তারপর
মুখে লাগিয়ে নিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিবেন তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবং
শেষে গোলাপ জল লাগাতে পারেন।
এবং এই ভাবে আপনি যদি নিম পাতার গুঁড়ার সাথে অ্যালেভেরা বা চন্দন বা হলুদ মিশিয়ে
নিয়ম করে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য
করছে।
ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
- ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার এ বলা হয়েছে যে ত্বকের যত্নেও নিম পাতা খুব কার্যকারী। কারন নিম পাতায় অ্যান্টি- ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এবং ব্রণ, ব্ল্যাকহেডসের মতো ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে নিম পাতা খুব কার্যকারী।
- এবং ত্বকের যত্নে ২টি নিম পাতা, ২টি পুদিনা পাতা, ৩টি তুলসি পাতা এবং ১টি লেবুর রস এক সাথে মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিবেন। এবং তারপর পরিমান মতো হলুদ গুঁড়া নিয়ে তার সাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরী করে নিয়ে ১৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখবেন তারপর ধুয়ে ফেলবেন। ত্বকের সমস্যায় ভালো ফল পাবেন।
- ১ চা চামচ নিম পাতার গুঁড়া, ১ চা চামচ বেসন তার সাথে পরিমান মতো টক দই মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরী করে নিয়ে ত্বকে ১৫ মিনিট দিয়ে রাখবেন। তারপর ধুয়ে ফেলবেন দেখবেন আপনার ত্বকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেছে।
- এবং নিম পাতার গুঁড়া, তার সাথে পরিমান মতো গোলাপজল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরী করে নিয়ে ১৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। ত্বকের জন্য ভালো ফল পাবেন।
- নিম পাতার গুঁড়া এবং তার সাথে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরী করে নিবেন। তারপর প্যাকটি ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখবেন। এবং ধুয়ে ফেলবেন দেখবেন ত্বকের সমস্যার জন্য ভালো কাজে দিবে।
নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা
নিম পাতার রস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হবেন। কারন একজন মানুষ যদি নিয়মিত নিম পাতা রস খাই তাহলে তার হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে,
ক্লান্তি দূর, ক্ষত নিরাময়, কাশি দূর, কৃমি সমস্যা, মূত্রনালীর সংক্রমন ইত্যাদি
দূর করতে নিম পাতা খুব কার্যকারী।
নিম পাতা রক্তের সুগার লেভেল কমায়, এবং রক্তনালীকে প্রসারিত করতে ও কার্যকারী।
এবং ভালো ফল পেতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কচি নিম পাতার রস খান। এবং আপনি যদি
৫টি গোলমরিচ, ১০টি নিম পাতা বেটে যদি খেতে পারেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
করতে সাহায্য করবে।
নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অনেক রয়েছে, আপনার শরীরে যদি চুলকানির সমস্যা থাকে তাহলে আপনি নিম পাতা পানিতে দিয়ে সেই পানি
ফুটিয়ে নিবেন। এবং বালতিতে থাকা পানির সাথে মিশিয়ে গোসল করতে পারেন তাহলে আপনার
চুলকানির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
নিম পাতায় অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান থাকে যা বিভিন্ন সংক্রমন ব্যাধি, ত্বকের
সমস্যার জন্য খুব কার্যকারী। এরকম সমস্যায় ভুগলে আপনি নিম পাতা পানিতে দিয়ে
ফুটিয়ে নিবেন তারপর গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে নিয়ে গোসল করুন ভালো ফল পাবেন।
তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার
তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, কারন নিম পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি থাকে যা তৈলাক্ত ত্বকের
কারনে ব্রণের দাগ দূর করে। নিম তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুব কার্যকারী কারন এটি
অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে এবং ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।
সিবাম উৎপাদন কমানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতে ত্বকে ব্রণ হওয়াকে প্রতিরোধ করে থাকে। এবং
পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ব্যবহার ও করতে পারেন।
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে খুব ভালো করা বলা হয়েছে যে একজন মানুষের জন্য এবং চর্মরোগের জন্য নিম পাতা খুব কার্যকারী। এবং বিভিন্ন রকমের চর্মরোগ, সংক্রামিত
পোড়া, সেপটিক ঘা তছাড়াও ত্বকের ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রামণের এড়াতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এবং পেটের আলসার ও ত্বকে দাদের মতো চর্মরোগেও নিম পাতা
কার্যকারী।
এবং পরিমাণ মতো নিম পাতা পেস্ট করে নিয়ে তার সাথে হাফ চা চামচ হলুদ, ১ চা চামচ
নারিকেলের তেল এবং অর্ধেক লেবুর রস নিয়ে সব গুলো মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরী করে
নিবেন। তারপর চর্মরোগের স্থানে দিনে দুই বার সকালে ও রাতে ব্যবহার করবেন। ১ ঘন্টা
রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন দেখবেন চর্মরোগ দূর করতে সাহায্য
করছে।
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয়
নিম পাতার বড়ি খেলে কি হয় তা জানলে আপনি অবাক হবেন। প্রথমে আপনি পরিমাণ মতো নিম পাতা নিয়ে বেটে নিবেন তারপর রোদে শুকিয়ে বড়ি বানাবেন। এবং নিম
পাতার এই বড়ি যদি আপনি সকালে খালি পেটে খেতে পারেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য, লিভারের
সমস্যা, চুলকানি দূর করতে সাহায্য করে।
নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়
নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়? নিম পাতার গুড়া অনেক উপকারি। আপনি যদি আধা চা চামচ নিম পাতার গুড়া, এক চা চামচ
মধু ১ গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানির সাথে মিশিয়ে সকালে খাবার খাওয়ার পর এবং রাতে
খাবার খাওয়ার পর যদি আপনি এইটা খেতে পারেন তাহলে আপনার ডায়াবেটিস দূর করতে
সাহায্য করবে।
এবং গর্ভবতী, ব্রেস্টফিডিং মা আবার যারা সন্তান ধারনের চেষ্টা করছেন তারা নিম
পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে, তাই সব কিছুরই কম বেশি উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতাও রয়েছে। নিম পাতার অনেক
উপকারিতা থাকলেও কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। নিম পাতায় অ্যান্টিবায়োটিক ও
অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান রয়েছে যা অতিরিক্ত পরিমানে ব্যবহার করলে আপনার কিডনির
সমস্যা হতে পারে।
এবং যাদের কিডনি বা লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়ম করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিম পাতা ব্যবহার করবেন।
এবং যারা গর্ভবতী মহিলা রয়েছে তাদের জন্য নিম পাতা খাওয়া উচিত নয় কারন নিম পাতায় কিছু উপাদান আছে যা গর্ভপাতের কারন হতে পারে।
নিম পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা কিছু কিছু ঔষধের সাথে প্রতিক্তিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য আপনি নিম পাতা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
এবং যাদের কিডনি বা লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়ম করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিম পাতা ব্যবহার করবেন।
এবং যারা গর্ভবতী মহিলা রয়েছে তাদের জন্য নিম পাতা খাওয়া উচিত নয় কারন নিম পাতায় কিছু উপাদান আছে যা গর্ভপাতের কারন হতে পারে।
নিম পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে যা কিছু কিছু ঔষধের সাথে প্রতিক্তিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য আপনি নিম পাতা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
শেষ কথাঃ চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার এবং নিম পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে
জেনেছেন। এবং আপনি যদি একজন স্বাস্থ্যে সচেতন মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে নিয়ম করে এবং
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিম পাতা চুলে ব্যবহার করতে পারেন এবং নিম পাতার গুড়া
খেতে পারেন তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ফল পাবেন।
এবং আজকের এই আর্টিকেলেটি পড়ার মাধ্যেমে আপনি যদি একটু উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আশা
করি আপনার পরিচিতদের শেয়ার করবেন। এবং এরকম বেশি বেশি আরও তথ্য পেতে আমার এই ওয়েব
সাইট ভিজিট করুন।
ট্রিক্সপ্রমোর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url